বিখ্যাত ইংরেজ কবি ও নাট্যকার রবার্ট ব্রাউনিং এর জন্মদিন আজ। তিনি ভিক্টোরিয়ান যুগের একজন প্রসিদ্ধ কাব্য-নাট্যকার ছিলেন। তার কবিতা বিদ্রূপ, চরিত্রায়ণ, হাস্যরস, সামাজিক ভাষ্য, ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনা ইত্যাদি কারণে জনপ্রিয় ছিলো। তার বেশিরভাগ কাব্যে গল্পকার হিসেবে একজন বাদক বা চিত্রকরকে দেখা যায়। মূলত রূপক হিসেবে এই চরিত্রগুলো তিনি তার লেখায় ব্যবহার করেছেন।
রবার্ট ব্রাউনিং ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ইংল্যান্ডের ক্যাম্বারওয়েল এ জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ছিলেন একজন পিয়ানোবাদক। তার পিতা ছিলেন একজন ব্যাংক কর্মচারী। তিনি একাধারে একজন শিল্পী, পণ্ডিত ও প্রত্নতাত্ত্বিক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তার প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য চিত্র ও বই এর এক বিশাল সংগ্রহ ছিলো। তিনি ল্যাটিন, ফ্রেঞ্চ, গ্রিক, হিব্রু ও ইতালীয় ভাষায় লেখা প্রায় ছয় হাজারেরও বেশি বই এর এক বিশাল সংগ্রহ গড়ে তুলেছিলেন। ব্রাউনিং এর শিক্ষার একটি বড় অংশই এসেছিলো তার পিতার কাছ থেকে। স্কুলের বাঁধাধরা নিয়ম কানুন তিনি পছন্দ করতেন না। তবে ছোটবেলা থেকেই তিনি খুব মনোযোগী ছাত্র ছিলেন। ধারণা করা হয় যে, মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই তিনি লিখতে ও পড়তে পারতেন।
ব্রাউনিং এর সাহিত্যজীবনের শুরুটা খুব সফল হলেও তিনি সেই সফলতা খুব বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি। তার লেখা প্রথম দীর্ঘ কবিতা ‘পলিন’ দান্তে গ্রাবিয়েল রসেটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলো। এর পরের কবিতা ‘প্যারাসেলসাস’ ওয়ারর্ডসওয়ার্থ ও ডিকেন্স কর্তৃক প্রশংসিত হয়। কিন্তু ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দে তার লিখিত দুর্বোধ্য কাব্য ‘সরডেলো’ কোনো জনপ্রিয়তা পায়নি। ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাউনিং আর একজন ইংরেজ কবি এলিজাবেথ ব্যারেটকে বিয়ে করেন। সেই সময়ে এলিজাবেথ তার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিলেন। বিয়ের পর তারা ইতালি চলে যান। সেখানে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে রবার্ট পেন ব্রাউন নামে তাদের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে এলিজাবেথা মারা যান। এরপর রবার্ট ব্রাউনিং তার ছেলেকে নিয়ে লন্ডনে ফিরে আসেন।
তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলি ‘মে্রন এন্ড ওমেন (কাব্য সংকলন)’, ‘দ্য রিং এন্ড দ্যা বুক’, ‘ড্রামাটিক লিরিকস’, ‘ড্রামাটিক রোমান্সেস এ্যান্ড লিরিকস’, ‘এ্যাসোল্যান্ডো’ প্রভৃতি।
রবার্ট ব্রাউনিং ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর ইতালির ভেনিসে তার পুত্রের বাড়িতে মারা যান। ওয়েস্ট মিনস্টার অ্যাবের পোয়েটস কর্নারে তার সমাধি আছে। সেখানে তিনি শায়িত আছেন আর এক বিখ্যাত ইংরেজ কবি লর্ড টেনিসনের পাশে।