বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা প্রতিবারই ইজতেমায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। এর ধারাবাহিকতার পাশাপাশি এবার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা সব সময় যেরকম থাকে এবারও তা থাকবে। সাইবার নিরাপত্তা যেটাকে আমরা বলি, সেই জায়গাটাতে আমরা কাজ করছি। সেইখানে যাতে কোন ঝুঁকি না থাকে আমাদের পুলিশ বাহিনী সেই জায়গাটাতেও কাভার করবে। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বলতে আমাদের পুলিশ, র্যাব, আনসার সবাই এখানে নিরাপত্তার কাজে যুক্ত থাকবে। প্রয়োজনে আমাদের বিজিবিও প্রস্তুত থাকবে।
শুক্রবার বিকেলে টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানে প্রস্তুতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ফলো-আপ সভার প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্ব ইজতেমায় সবাই মিলিতভাবে আমাদের সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনী এবং সামরিকবাহিনীও সহযোগিতা করছে। এখানে প্রতিবারই সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তুরাগের উপর পল্টুন ব্রিজ নির্মাণ করে থাকে। কাজেই সবারই এখানে দৃষ্টি রয়েছে। আমি মনে করি এবারও অত্যন্ত সুন্দরভাবেই বিশ্ব ইজতেমা সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি কাজের প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমায় দুইটি গ্রুপ রয়েছে। একটি হলো জোবায়ের গ্রুপ এবং অন্যটি হলো সা’দ গ্রুপ। কোভিডের আগে দুই পক্ষই দুইবার বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার প্রথম পর্ব ১৩-১৫ জানুয়ারি জোবায়ের গ্রুপ এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০-২২জানুয়ারি সা’দ গ্রুপ বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন। আগেও তারা দুইপক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমা পরিচালনা করেছেন।
তাদের মধ্যে বিভেদ ও ভুল বুঝাবুঝির বিষয়ে বলতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা আগেও ইজতেমা আয়োজন করেছেন, নতুন করে তাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হওয়ার কিছু নেই। আমার মনে হয় তারা উভই পক্ষই সুন্দরভাবে ইজতেমাটা শেষ করবেন। বিদেশি মেহমানরা আগেও প্রতিবার যেভাবে আসতেন, যেভাবে সুযোগ সুবিধা পেতেন এবারও তা অব্যাহত থাকবে এবং সেবার পরিধি আরও বৃদ্ধি করতে ও এগুলো যাতে আরো সুন্দরভাবে পায়, দ্রুততার সঙ্গে পায় সে ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।
বিদেশী মেহমানদের অবস্থান করা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি মেহমানদের জন্য এবারে আরেকটু সুন্দর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথম পর্ব শেষে তারা ইজতেমাস্থল ত্যাগ করে আমাদের হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন। আর দ্বিতীয় পর্বে বিদেশি মেহমান যারা আসবে তারা ইজতেমা মাঠেই অবস্থান করবেন এবং ইজতেমা শেষে তারা যার যার গন্তব্যে চলে যাবেন।
টঙ্গীর তুরাগ তীরে প্রথম দফায় আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় ২০ জানুয়ারি থেকে ২২জানুয়ারি পর্যন্ত এবারের বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি পর্বেই শেষ দিন আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের কশিশনার মোল্যা নজরুল ইসরাম, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, বিশ্ব ইজতেমার দুই পক্ষের মুরুব্বীসহ ইজতেমা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।