ভুল চিকিৎসায় ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী মাহবুবা রহমান আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় ডা. সংযুক্তা সাহা ও অভিযুক্ত চিকিৎসকের সনদ বাতিল এবং আটকসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এ সময় দাবি বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, নবজাতক সন্তানের স্বপ্ন নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী আঁখি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার স্বপ্ন গুড়েবালি করে দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থার দাবিও জানান তারা।
ঢাকা কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সেন্ট্রাল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মামলা তুলে নেবার জন্য আঁখির স্বামী ইয়াকুবকে হুমকি দিচ্ছে। এটি অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ। অবিলম্বে সেন্ট্রাল হাসপিটালের পরিচালককে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
আঁখির সহপাঠী ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী মুনিরা আনজুম বলেন, ‘ফেসবুকে প্রচারণা দেখে ডা. সংযুক্তা সাহার কাছে স্বাভাবিক ডেলিভারির স্বপ্ন নিয়ে আঁখি এসেছিলেন। কিন্তু ডাক্তারের অদক্ষতায় আঁখির মূত্রথলি কেটে দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।’
আনোদলনকারীদের দাবিগুলো হলো-ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে নবজাতক ও আঁখিকে হত্যাকারী ডাক্তার সংযুক্তাসহ জড়িত চিকিৎসকদের লাইসেন্স বাতিল করে গ্রেফতার করতে হবে। সেন্ট্রাল হসপিটালের লাইসেন্স বাতিল করে পরিচালককে গ্রেফতার করতে হবে। দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মনিটরিং সেল গঠনের মাধ্যমে সকলের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেন্ট্রাল হাসপাতাল আঁখির পরিবারকে ২ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুন ইডেন কলেজের ওই শিক্ষার্থীর প্রসব বেদনা শুরু হলে রাত ১২টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর সেন্ট্রাল হসপিটালে ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে ভর্তি হন। কিন্তু ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ওই নারীর ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।
এ সময় ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করা হয়। এতে বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে। এরপর গত রোববার রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর পর মা ইডেন কলেজছাত্রী মাহবুবা রহমান আঁখিও মারা যান।