ইতিহাস ফিরে আসে তার মতো করে। ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ নভেম্বর যে পথ দিয়ে ভারতবর্ষে স্থাপিত রেল প্রথম বাংলাদেশে এসেছিল ঠিক সেই পথে আজ থেকে চলবে নতুন ট্রেন। বঙ্গভূমিতে রেল পরিচালনার ১৬১তম বর্ষের ১৪ দিন আগে একই মাসে ঢাকা থেকে সেই জগতি রেল স্টেশনের পথে ছুটবে নতুন এক যাত্রায়। সেই যাত্রায় যেখানে এসে পদ্মার পাড়ে থেমে যেতো ট্রেন, তার আগেই বাঁক নিয়ে রেল চলবে রাজধানী ঢাকা থেকে দক্ষিণের বিভাগ খুলনায়।
রেলের ইতিহাস বলে এ অঞ্চলে ১৮৬২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি হয়ে প্রথম ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এরপর কলকাতা থেকে ঢাকা অভিমুখী মেইল জগতি থেকে কুষ্টিয়া, কুমারখালী, রাজবাড়ী হয়ে গোয়ালন্দ এসে পৌছে। প্রায় একই পথে আজ ঢাকা থেকে ট্রেন চলবে খুলনার পথে। সুন্দরবন খুলনা থেকে রাত পৌনে ১০ টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করবে। পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় পৌছাবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। পরের দিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বে। আগে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে যমুনা পার হয়ে চলা সময় থেকে এতে বাঁচবে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা। ২ নভেম্বর রাতে ঢাকা ছাড়বে বেনাপোল এক্সপ্রেস। রাত পৌনে ১২টায় ছেড়ে বেনাপোলে পৌঁছুবে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে।
ট্রেন দুটির যাওয়া-আসার সময় সূচি ও ভাড়ার তালিকা আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। এই দুটি ট্রেনে নানা অজুহাতে প্রথমে অনেক ভাড়া প্রস্তাব করা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেই ভাড়া সহনীয় করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রেল যোগাযোগের ইতিহাসে তাই আজকের দিনটি নানাভাবে নতুন যাত্রা যুক্ত করবে। ঢাকার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমের শেষ প্রান্ত মোংলা বন্দর পর্যন্ত ট্রেন চালুর সব রকম আয়োজনও এখন শেষের পথে। খুলনা থেকে বাগেরহাটের মোংলা পৌঁছুতেও রুপসা নদীর ওপর তৈরি হয়েছে দৈর্ঘ্যে রেলের সবচেয়ে বড় রেল সেতুও। রেলমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খুব দ্রুতই রাজধানী ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হবে সুন্দরবন ঘেঁষা মোংলা বন্দর। ফলে রেল নেটওয়ার্ক অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রসারিত হতে চলেছে।