ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে হাইকোর্টের নির্দেশে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের শোকজ করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। তবে বুধবার অফিস চলাকালীন শেষ সময় পর্যন্ত তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান শোকজের জবাব দিয়েছে।
ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, হালিমা আক্তার উর্মী ও ইসরাত জাহান মিম এর জবাব দেননি। তার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছেন। অন্তরা ও মীম সোমবার এবং উর্মী বুধবার সময় বৃদ্ধির আবেদন করেন বলে জানা গেছে।
একইসঙ্গে তারা আবেদনে কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনের কপি ও হাইকোর্টের নির্দেশনার কপি চেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর ও একাডেমিক শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ চেয়ে গত ৬ মার্চ উপাচার্য বরাবর আবেদন করেছেন তাবাসসুম ও মুয়াবিয়া। তারা উভয়ই ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। আগামী ১৮ মার্চ তাদের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
গত রোববার তাবাসসুম ইসলাম পরীক্ষায় অংশ নিতে বিভাগীয় সভাপতি ড. বখতিয়ার হোসেন বরাবর উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। তার আইনজীবী ঝিনাইদহ জজ কোর্টের আইনজীবী মোজাম্মেল হোসেন এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। তার মক্কেলকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ না দিলে আইনী ব্যবস্থা নেবেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগীয় সভাপতি নোটিশ সংযুক্ত করে রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে তিনি পরীক্ষার বিষয়ে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত দেয়ার অনুরোধ জানান।
বিভাগের সভাপতি ড. বখতিয়ার হাসান বলেন, বহিষ্কারাদেশে তাদের দু’জনের (তাবাসসুম ও মুয়াবিয়া) একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। যেহেতু তাদের একজন উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন, তাই প্রশাসনের কাছে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছি। তবে আমাকে এখনো এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, সময় বাড়ানোর আবেদন ও পরীক্ষার বিষয়ে আবেদনগুলো ফাইল আকারে ভিসির কাছে পাঠানো হয়েছে। হাইকোর্টের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের বারবারই বলেছে, হাইকোর্টের বিষয়টি ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত যেন কোনও কার্যক্রম না করি।
প্রসঙ্গত, গত ১ মার্চ ওই পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইননুযায়ী বহিষ্কার ও শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও জুডিশিয়ারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নির্যাতনের সত্যতা পায় হাইকোর্ট। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশনার পর একইদিনে পাঁচ অভিযুক্তকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।