ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ কিলো ভোল্ট (কেভিএ) ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি সাবস্টেশনের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে সাবস্টেশন দুটিতে ৩০০ ও ৫০০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি জেনারেটর বসানো হবে। কিন্তু সাবস্টেশন দুটির কাজ শুরুর এক বছর আগে জেনারেটর ক্রয় করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এমনকি জেনারেটর দুটি স্যাঁতসে্যঁতে স্থানে রাখা হয়েছে। তবে জেনারেটর দুটি ক্রয়ে প্রকৌশল দপ্তরের অনুমতি নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এ নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল অফিস ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৯২ হাজার ৫৩০ টাকা ব্যয়ে গত বছরের ১০ নভেম্বর সাবস্টেশন দুটির কাজ পেয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন। কাজ শুরুর ১৩ মাসের মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি শেষ করতে বলা হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর কাজ শেষ করার কথা থাকলেও মাত্র ১৫ শতাংশ কাজ করতে পেরেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে কাজ শুরুর এক বছর আগেই দুটি জেনারেটর ক্রয় করে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘প্রকৌশল অফিসকে অবহিত ছাড়া কোনোভাবেই জেনারেটর দুটি ক্যাম্পাসে আনা সম্ভব না। কাজ শেষ হওয়ার পর এই দুটি জেনারেটর স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হলে তা ক্ষতির কারণ হবে।’
জানা গেছে, ২ কোটি ৩৭ লাখ ২২ হাজার ৬৯৬ টাকার জেনারেটর দুটি এক বছর ধরে টিনশেডের ভেতরে রাখা হয়েছে। জায়গাটি স্যাঁতসেঁতে হওয়ায় জেনারেটর দুটি নষ্টের আশঙ্কা করছে প্রকৌশল দপ্তর। এদিকে কাজটি বুঝে নেওয়ার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কামরুন্নাহারকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট টেকনিক্যাল কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। কমিটির অন্যরা হলেন ইইই বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল মোমেন, ঝিনাইদহ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ইবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) আব্দুল মালেক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) এ. কে. এম শরীফ উদ্দীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহিদ উদ্দীন মো. তারেক বলেন, ‘এই কাজটি বুঝে নেওয়ার জন্য বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি করেছে। কাজ শেষ হলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করবে ওই কমিটি। তবে আমাকে না জানিয়েই জেনারেটর দুটি ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী জেনারেটর দুটি বসানোর পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
ঠিকাদারি কোম্পানি মজিদ সন্স কন্সট্রাকশন প্রজেক্ট ম্যানেজার মশিউর রহমান রাসেল বলেন, ‘এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল বিভাগ বিস্তারিত বলতে পারবে। এটা কবে ক্যাম্পাসে গেছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মেকানিক্যাল) আব্দুল মালেক বলেন, ‘বছর খানেক আগে আমাদের না জানিয়েই জেনারেটর দুটি ক্রয় করে ক্যাম্পাসে আনা হয়েছে। কোনোমতে ওপরে টিন দিয়ে রাখা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয়। নয়তো প্যানেল বোর্ড নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি জেনারেটরের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে। এজন্য কোনোভাবেই এই জেনারেটরগুলো ব্যবহার করা উচিত হবে না।’