ঈদের আগে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

ঈদের আগে বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড নাশকতা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মানুষ যখন ভালো অবস্থার দিকে যাচ্ছে, আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে, সেই সময়ে আবার অগ্নিসন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন, নানাভাবে মানুষকে ক্ষতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা যারা করছে তাদের প্রতি জাতির ঘৃণা। যারা এ অপরাধ করছে তাদের বিচার হবে। 

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্য এবং আহতদের সঙ্গ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে আগুনের ঘটনা বেড়ে গেল। আমার মনে সন্দেহ হচ্ছে, এটাও নাশকতা কি-না। যারা জীবন্ত মানুষকে গাড়িতে আগুন দিয়ে, বাসে আগুন দিয়ে, রিকশায় আগুন দিয়ে পোড়াতে পারে, এরা মানুষের ক্ষতি করাটাই জানে। ঈদের সময় মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে, হয়তো সেই পথটাও বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। আমার মনে হয়, এখানেও একটা ঘটনা আছে। 

১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্টের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, একদিন শুনলাম, আমার কেউ নেই। আমরা দুটো বোন বিদেশে এতিম হয়ে গেলাম। কী বর্বরভাবে আমার মা, বাবা, তিন ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি বাংলাদেশে ফেরার পর থেকে আপনাদের (বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসে নিহত ব্যক্তিবর্গের পরিবার) খোঁজ নিচ্ছিলাম। অনেককেই হত্যা করা হয়েছে। আমাদের গ্রামের লুৎফরকে ফিরে পেয়েছিলাম, তার ছেলে-মেয়েদের আমি দেখতাম। তারপর থেকে অনেক চেষ্টা করেছিলাম অন্যদের নাম জোগাড় করতে। স্বাভাবিকভাবে শুরুতে নামগুলো পাওয়া খুব কঠিন ছিল। পরে ধীরে ধীরে সেই নামগুলো খুঁজে বের করতে পেরেছি।  

তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্টের পর থেকে বারবার সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তারা। আমি যখন বিরোধী দলে ছিলাম এমন একটা দিন ছিল না যে লাশ টানতে হয়নি! এরপরও কী করে মানুষ তাদের পাশে থাকে এটা আমি বুঝে উঠতে পারি না।

সরকারপ্রধান বলেন, দিনের পর দিন ফাঁসির যে কাহিনী এগুলো আমরা বিদেশে থেকেই শুনতাম। কেন্দ্রীয় কারাগারে নেতাদের হত্যা করা হলো। কোনো অপরাধ নেই, জানেও না তাদের কী অপরাধ ছিল। ধরে নিয়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বর্বরতা করেছিল, বিএনপি জামায়াতও একইভাবে বর্বরতা করেছে। জিয়াউর রহমান তো হাসতে হাসতে মানুষের ফাঁসির রায় লিখত। কোনো বিচার ছিল না। ফাঁসির রায় দেওয়া হয়ে গেছে, আর বিচার হয়েছে পরে। কী জুলুম, কী অত্যাচার, কী অন্যায়। আমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার করতে ৩৫ বছর লেগেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক বিচারক বিব্রতবোধ করে রায় দিতেন। যেখানে এতগুলো মানুষ হত্যা করল, সেখানে বিচারকরাও রায় দিতে লজ্জা বোধ করেন, এটাও আমাকে দেখতে হয়েছে। এজন্য আমি আপনাদের কষ্ট বুঝি। কারণ, আমিও একই রকম কষ্ট পেয়েছি।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের বোমা হামলায় দুই হাত হারানো এস আই মকবুল হোসেন এবং ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে বাসে পেট্রোল বোমা হামলায় আহত ও অগ্নিদগ্ধ গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার সালাউদ্দিন ভূঁইয়া।

অনভূতি প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেনের সহধর্মিণী নুরুন্নাহার বেগম এবং সার্জেন্ট মোশরাফুল আলমের মেয়ে মাকসুদা পারভীন রিমনা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ভিসি নিয়োগের দাবিতে এবার উত্তরবঙ্গ ব্লকেড বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণার দাবি জামায়াতের শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা - dainik shiksha শিক্ষক আত্মগোপনে দায়িত্বে ছাত্ররা ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি - dainik shiksha ভারতে পাঠ্যবই ছাপানোর বিপক্ষে ৯২ শতাংশ বাংলাদেশি পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - dainik shiksha ভয়ংকর বিপদের মধ্যে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051889419555664