ঈদের আগেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছে মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশন। একইসঙ্গে শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেয়া, মাদরাসা সরকারিকরণ, সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেডে বেতন দেয়া এবং চাকরির ১৬ বছর পূর্তিতে মাদরাসার সব প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি আদায়ে ১১ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দেয়া, ২৭ মে জেলায় জেলায় মানববন্ধন এবং ১০ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন সংগঠনদের নেতারা।
শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন মাদরাসা জেনারেল টিচার্স এসোসিয়েশনের নেতারা।
বিএমজিটিএর মহাসচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি জহির উদ্দিন হাওলাদার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকার এমপিওভূক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে জাতীয় বেতন স্কেলের অন্তর্ভূক্ত করেছেন, ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিয়েছেন, ২০ শতাংশ নববর্ষ ভাতা দিয়েছেন, প্রায় ছয় শতাধিক স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ করেছেন এবং প্রতি অর্থ বছরেই নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করছেন। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। কিন্তু এখনও একটি মাদরাসাও সরকারি করা হয়নি। তাই স্কুল-কলেজের আনুপাতিক হারে মাদরাসা সরকারি করার জোর দাবি জানাই।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ ও কর্মচারীদেরকে ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দেয়ার নিয়ম চালু হওয়ার পর ১৯ বছর পার হলেও খণ্ডিত উৎসব ভাতার পরিবর্তন হয়নি। তাই ঈদ-উল-ফিতরের আগেই শিক্ষক- কর্মচারীদেরকে শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সকল নিত্যপণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের এই উর্ধ্বগতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের জীবনযাপন কষ্টকর হয়ে পড়েছে, বেতন দিয়ে কারও মাস চলছেনা। তাই শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা দেয়ার দাবি জানান তিনি। আর শিক্ষক-কর্মচারীদের সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেয়া এবং একটি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বদলি প্রথা চালু করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে বিএড স্কেলকে উচ্চতর গ্রেড বিবেচনা না করে সহকারী শিক্ষকদেরকে ৮ম গ্রেড দেয়া, সিনিয়র শিক্ষক পদ সৃষ্টি ও জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদ বিলুপ্ত করে চাকরির ১৬ বছর পূর্তিতে সকল প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়ার জোর দাবি জানান।
এছাড়া মাদরাসার প্রশাসনিক পদে (সহ: সুপার, সুপার, উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ) জেনারেল শিক্ষক নিয়োগ, ইবতেদায়ি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয়া এবং ইবতেদায়ি মাদরাসার সরকারিকরণের দাবি জানান। বিএমজিটিএর পক্ষ থেকে ঈদের আগেই মহার্ঘ্য ভাতা ও শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং ঈদের আগে দাবী বাস্তবায়ন না করা হলে ধারাবাহিক আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঘোষণ দেন তিনি।
পরে বিএমজিটিএর মহাসচিব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির মধ্যে আছে, ১১ মে সব ইউএনওদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপি দেয়া, ২৭ মে জেলায় জেলায় মানববন্ধন এবং ১০ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলুল বারী বেলাল, ড. মোঃ মোখলেছুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ড. মুহাঃ জাকির হোসেন, আব্দুল আহাদ সিদ্দিকী, মো. সামছুল কবির শামীম, মোঃ হোসনি মোবারক, তাসলিমা মুন্নি, হুমায়ূন তালুকদার, আব্দুল কাদের জনি, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আমজাদ হোসেন, আঃ হালিম, মোঃ আলী নুর হোসেন, মোঃ আব্দুল মালেক, মোঃ গোলাম মোস্তফা, মোঃ আবু আহমেদ, মাসুদা সুলতানা, মোঃ আলী অ্যাটম, সিঃ সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক গুল মোঃ মাহবুবুল্লাহ, মোঃ আল-আমিন সরকার, নুরুল আমিন শিশির, মোঃ ফারুক রশিদ, মো মজিবুর রহমান, পরিকল্পনা সম্পাদক সালেহ উদ্দিন জিন্নাহ, মোঃ নাসির উদ্দিন, অর্থ-সম্পাদক খোরশেদ কবির মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক আরিফ ইমাম, প্রচার সম্পাদক রাফি উদ্দিন শামীম, প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ মোস্তাক আহমেদ, মোঃ জাকির হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হক, মোঃ শফিকুল ইসলাম ফকির, ইসলাম, মোঃ মশিউর রহমান, মোঃ ওবায়দুর রহমান, মোঃ ইমদাদুল হক, মোঃ জহিরুল ইসলাম, নেকবর হোসেন রঞ্জুসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ।