আমাদের বার্তা, রাবি: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর অধিকাংশ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে বিদেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করার। তবে সময়ের সাথে সাথে সেই সংখ্যাটাও কমতে থাকে। খুব কম শিক্ষার্থী তাদের স্বপ্নটা ধরে রাখতে পারেন। সঠিক নির্দেশিকা ও যথেষ্ট পরিশ্রমের অভাবে হারিয়ে যায় এসব স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীরা। তবে এবার স্বপ্ন ছোঁয়ার স্বাদ পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের পাঁচ মেধাবী শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তাঁরা আমেরিকার পৃথক চার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণায় ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন। প্রবল ইচ্ছে শক্তি, কঠোর পরিশ্রম, লেগে থাকার মানসিকতা এবং সুপ্রসন্ন ভাগ্য তাদেরকে পৌঁছে দিয়েছে স্বপ্ন পূরণের অন্যন্য এ উচ্চতায় বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা।
স্কলারশিপে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন ২০১৪-১৫ সেশনের সেলিম রেজা টনি, ২০১৫-১৬ সেশনের মোসা. মরিয়ম খাতুন, নাজমুল হক, মো. জাহিদুল ইসলাম এবং ২০১৬-১৭ সেশনের মো. এহসানুল কবির। এদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে আমেরিকা পৌঁছেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে বাকিরাও আগামী আগষ্ট মাসে পাড়ি জমাবেন আমেরিকায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রমে সবসময় তাঁরা ছিলো একধাপ এগিয়ে। মাস্টার্সে চাঁর জনেরই ফলাফল ছিল সিজিপিএ ৪.০০। আরেকজনের ৩.৮৯। অনার্সে যথাক্রমে তাঁদের ফলাফল ছিলো ৩.৮০, ৩.৭৫, ৩.৮২, ৩.৯১ ও ৩.৯৫। বৈশ্বিক মহামারী করোনার আগে থেকেই সবাই গবেষণা শুরু করেন। স্নাতকোত্তর শেষ করার আগেই বিভিন্ন জার্নালে সবারই বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এরমধ্যে সেলিম রেজা টনির ৯টি, মরিয়মের ৬টি, নাজমুলের ৭টি, জাহিদের ৬টি এবং এহসানের ২টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও তাদের প্রত্যেকেরই কিছু পেপারস প্রসেসিংয়ে আছে। এ গবেষণাগুলোই তাদের এ স্কলারশিপ পেতে সুযোগ করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পৃথক যে চার বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণায় ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়েছেন সেগুলো হলো পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনজন, নিউ ম্যাক্সিকো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন এবং ওকলাহোমা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন। তারমধ্যে মরিয়ম খাতুন পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও স্কলারশিপ পেয়েছেন।
এ বিষয়ে ল্যাবের সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ বলেন, তাদের সাফল্যে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। এটা বেশ খুশির খবর যে, আমেরিকায় একসাথে পাঁচজনের ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ হয়েছে। তাদের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, নিঃসন্দেহে এই সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আনন্দের এবং গর্বের। এরাই আমাদের আগামী। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামীতে জাপানে তিনজনকে পাঠানো হবে। এছাড়াও চীন, ইউরোপসহ অনেক দেশে স্কলারশিপে শিক্ষার্থী পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ল্যাব সুযোগ-সুবিধা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান আরো বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছি। এখান থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি বেশি উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে বলে আমরা আশাবাদী।