উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষা আইন ‘অসাংবিধানিক’ বলে বাতিল করেছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার হাই কোর্টের সেই নির্দেশ খারিজ করে দিলো ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষা আইন বৈধ। যদিও একই সঙ্গে আদালত এই আইনকে ‘সাংবিধানিক’ বলেও উল্লেখ করে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে উত্তরপ্রদেশে মাদরাসা চালু রাখতে আর বাধা রইল না।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে উত্তরপ্রদেশের মাদরাসা শিক্ষা আইন সংক্রান্ত মামলার রায়দান ছিল। রায় দেওয়ার সময় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আদালত মাদরাসা শিক্ষা আইনের বৈধতা বহাল রাখছে। এই আইন সাংবিধানিক। ইলাহাবাদ হাই কোর্ট রায় দেওয়ার সময় আইনের মৌলিক কাঠামোগত ত্রুটির কথা বলেছিল। তা ভুল ছিল। বেঞ্চ আরও বলেছে, ‘‘এই আইন মাদরাসা প্রশাসনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে না।’’
সুপ্রিম কোর্ট রায়দানের সময় আরও জানায়, মাদরাসা আইনে কিছু ধর্মীয় প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত থাকায়, তা অসাংবিধানিক হতে পারে না। তবে এই আইনের অধীনে ‘ফাজ়িল’ এবং ‘কামিল’ ডিগ্রিপ্রদান অসাংবিধানিক। কারণ, এই সংশ্লিষ্ট বিধান ইউজিসি গাইডলাইনের পরিপন্থী।
উল্লেখ্য, সমাজবাদী পার্টির প্রধান মুলায়ম সিংহ যাদব মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘উত্তরপ্রদেশ মাদরাসা বোর্ড শিক্ষা আইন’ কার্যকর হয়েছিল। কিন্তু যোগী আদিত্যনাথ সরকারে আসার পরই রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি নিয়ে এক সমীক্ষা শুরু করে। মাদরাসাগুলিতে কোনও বিদেশি অনুদান আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমীক্ষা করে। একই সঙ্গে রাজ্য সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে ‘মূল শিক্ষাব্যবস্থা’র অন্তর্ভুক্ত করার কাজও করে। সেই আবহেই মাদরাসা শিক্ষা আইনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়।
গত মার্চ মাসে আবেদনকারীর আবেদনে সাড়া দিয়ে হাই কোর্ট মাদরাসা শিক্ষা আইনকে ‘অসাংবিধানিক এবং ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের পরিপন্থী’ বলে বাতিল করে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সেই মামলায় রায়ে মাদরাসার পুরনো আইনকে ‘বৈধ’ বলল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্য সরকার মাদ্রাসাগুলির শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ করতে পদক্ষেপ করতে পারে।