উপবৃত্তি নিয়ে শঙ্কায় প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা

চাঁদপুর প্রতিনিধি |

চাঁদপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটছে না অভিভাবকদের। ইতোমধ্যে ছয় মাসের টাকা দেওয়া হলেও পরবর্তী তিন মাসের টাকা দেওয়ার সময় চলে আসায় অভিভাবকদের মাঝে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষার্থীদের চলতি বছর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং ‘নগদে’ টাকা দিয়ে আসছে। তার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের এই উপবৃত্তির টাকা একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে। যার কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

জানা গেছে, চাঁদপুর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে এক হাজার ১৫৬টি। প্রাক-প্রাথমিক ব্যতীত জেলায় প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট শিক্ষার্থীর সংখ্য দুই লাখ ১৯ হাজার ৪০২ জন। যারা প্রত্যেকেই উপবৃত্তি পেয়ে আসছে। সরকার তাদের মাসিক ১৫০ টাকা করে উপবৃত্তি প্রদান করে আসছে। গেল বছর পর্যন্ত রুপালী ব্যাংকের ‘শিওর ক্যাশ’ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শিক্ষার্থীদের অর্থ প্রদান করে আসছিল। হঠাৎ ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিং-এ টাকা প্রদান করায় মোবাইল সিম থেকে টাকা হ্যাকিং হওয়ার অভিযোগ করতে থাকেন অভিভাবকরা। চাঁদপুরে ভুক্তভোগী অভিভাবকরা জানান, ‘নগদে’ টাকা প্রদান করলে মোবাইলে কোনো এসএমএস আসে না। যার কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানতেই পারেন না তাদের সিমে টাকা আসছে। যখন জানে টাকা আসছে তখন এজেন্টের কাছে টাকা তোলার জন্য গেলে দেখা যায় অ্যাকাউন্টের বিপরীতে পিনকোড পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন পিনকোডের জন্য হটলাইন কিংবা কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করলে নতুন পিন দেওয়া হলেও অ্যাকাউন্টে ব্যালেন্স শূন্য দেখায়। এ নিয়েই শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকদের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এমনকি অনেক অভিভাবক গালমন্দসহ স্কুল শিক্ষকদের সঙ্গে তুমুল ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন।

চাঁদপুরে কর্মরত বেশ কিছু শিক্ষক জানান, অনেক অভিভাবক উপবৃত্তির টাকা না পেলে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের দোষারোপ করেন, শিক্ষকরা টাকা মেরে দিয়েছেন। তাদের কোনোভাবেই বুঝানো সম্ভব হচ্ছে না যে, এই টাকা সংঘবদ্ধ কোনো চক্র তুলে নিয়ে গেছে। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের মাঝে সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হচ্ছে। এর ওপর রয়েছে অভিভাবকের ফোন নাম্বার সমস্যা। অনেক ফোন নাম্বারধারী পূর্বের দেওয়া নাম্বার হয় ব্যবহার করছেন না কিংবা ওই নাম্বারধারী কর্মসূত্রে এলাকার বাইরে আছেন।

এদিকে টাকা খোয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার কোনো প্রতিকারও নেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসের নিকট। এমন পরিস্থিতিতে দীর্ঘ বিরতির পর বিদ্যালয় খুলে দেওয়ায় এখন অভিভাবকরা তাদের টাকার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে ভিড় করছেন। সঙ্গে তারা আরও দাবি করছেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের টাকা যেন কোনোভাবেই নয়-ছয় না হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘নগদ’ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং যা ইতোপূর্বে ছিল ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস’-এর। কয়েক দিন আগে ‘নগদ’ ডাক বিভাগের বলে জানিয়েছেন ডাক বিভাগের মহাপরিচালক।

চাঁদপুরে কর্মরত শিক্ষকরা সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা প্রেরণের পূর্বে স্ব-স্ব মোবাইল নাম্বারে আগাম এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দিলে তা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে। পাশাপাশি শিক্ষা অফিসের নিজস্ব কাস্টমার কেয়ারের মাধ্যমে দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিলে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাহাব উদ্দিন চাঁদপুর জেলায় হ্যাকিং করে টাকা নিয়ে গেছে এরকম কোনো অভিযোগ তিনি পাননি বলে জানান। টেকনিক্যাল কারণে দুই-একটা সমস্যা হয়তো হতে পারে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি - dainik shiksha মাধবীলতা নয়, স্কুলের নাম কচুগাড়ি পুনর্বহালের দাবি খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! - dainik shiksha খুদে শিক্ষার্থীর হাতে অস্ত্র কেনো! এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ - dainik shiksha এইচএসসির ফরম পূরণ শুরু আজ মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে - dainik shiksha মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে জানুয়ারিতে মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা - dainik shiksha মুজিবনগর দিবসে সব স্কুল-কলেজে আলোচনা মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! - dainik shiksha মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ফটোকপি পোড়ানো কেমন প্রতিবাদ! কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023181438446045