উপাচার্যহীন চলছে জবি

আসাদুল ইসলাম, জবি |

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। উপাচার্যের পদত্যাগ এক মাস পার হলেও এখনো নতুন উপাচার্য পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। একই সময়ে উপাচার্যের পাশাপাশি পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল প্রোভোস্ট, পরিবহন প্রশাস, জনসংযোগ তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর প্রধান, ছাত্র কল্যাণ পরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর প্রধানরা।

উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরেও হচ্ছে না নিয়োগ। যার ফলে বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক জটিলতা। শিক্ষার্থী, কর্মচারীরা বিভিন্ন বিষয়ে দিতে পারছেন না অভিযোগ, পাচ্ছেন না সমাধানও। অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজেও দেখা যাচ্ছে দীর্ঘসূত্রতা। রেজিস্ট্রার দপ্তরও চলছে জরুরি ভিত্তিতে ট্রেজারারের নিয়োগ দেয়া ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার দিয়েই। 

এদিকে উপাচার্য পদত্যাগের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অধ্যাপকদের মধ্য থেকেই নতুন উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন, বিভাগ সংযোগ, গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। শিক্ষাসচিবের নিকট লিখিত আবেদন ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা, ঘোষণা দিয়েছেন গেট লক কর্মসূচিরও। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, আমরা মনে করছি বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের জন্য অতি দ্রুত আমাদের একজন উপাচার্য প্রয়োজন। দীর্ঘদিন উপাচার্য না থাকায় অনেক জটিলতাও দেখা দিচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও উপাচার্য নিয়োগ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইতোপূর্বে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব উপাচার্য এসেছেন তারা কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করেনি। তাই আমরা এসব জটিলতা নিরসনে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ চাই।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন উপাচার্যহীন থাকলে আপগ্রেডেশনসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে শূন্যতা তৈরি হয়। শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়। আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দিতে আমাদের যে দাবি, আশা করি সরকার তা মেনে নেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট, অ্যাকডেমিক কাউন্সিল, ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে নিতে হয়। এসব মিটিং উপাচার্য ডাকেন। এখানে একটু জটিলতা হচ্ছে। আরেকটা বিষয় হলো-প্রক্টর নেই, পরিবহন প্রশাসক নেই, একজনকেই সবকিছু বহন করতে হচ্ছে। ইউনিভার্সিটির মধ্য থেকেই দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ হওয়া উচিত। আমাদের শিক্ষকেরা তো অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও দায়িত্ব পালন করছেন, তাহলে এখানে কেনো পারবেন না।  
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কাজ যেমন-একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট মিটিং উপাচার্য ছাড়া সম্ভব নয়। উপাচার্য না থাকায় বেশ কিছু কাজ পেন্ডিং ও থাকে। দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ হলে এসব সলভ হবে বলে আমি মনে করি। উপাচার্য নিয়োগ হলে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তগুলোতেও নিয়োগ দেয়া সম্ভব হবে।

 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027530193328857