এইচএসসিতে বিতর্কিত প্রশ্ন : চার শিক্ষকের এমপিও বাতিল হচ্ছে

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

এইচএসসি পরীক্ষায় বিতর্কিত ও সিলেবাসের বাইরের প্রশ্ন প্রণয়নে জড়িত চারজন শিক্ষকের এমপিও বাতিল হচ্ছে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় বিতর্কিত প্রশ্ন প্রণয়ন ও বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন করায় তাদের এ শাস্তি দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ওই চারজন শিক্ষককে শোকজ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ তাদের পাঠানো শোকজ নোটিশ প্রকাশ করেছে। 

শোকজ করা চারজন শিক্ষকই বিভিন্ন বেসরকরি কলেজে কর্মরত। তাদের মধ্যে বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় বিতর্কিত প্রশ্ন প্রণয়নে জড়িত ছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রশান্ত কুমার পাল, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ভেড়ামারা আদর্শ কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম এবং নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ। আর বাংলা দ্বিতীয় পত্রে সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন প্রণয়ন করেছেন কুমিল্লার বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক। এর চারজন শিক্ষকের এমপিও কেনো বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে শোকজ করা হয়েছে। 

এদিকে বাংলা প্রথম পত্রের বিতর্কিত প্রশ্ন প্রণয়নে জড়িত ছিলেন সরকারি কলেজের দুই শিক্ষকও। তারা হলেন, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন ও সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিকুর রহমান। তাদের ইতোমধ্যে পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে বাদ দিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। 

জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল বিতর্কিত প্রশ্ন প্রণয়নে জড়িত বেসরকারি কলেজের চার শিক্ষককে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপসচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, বিতর্কিত, অসঙ্গতিপূর্ণ ও সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন প্রণয়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কেনো তাদের এমপিও বাতিল করা হবে না তার জবাব ১০ কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে পাঠানোর জন্য বলা হলো। 

এইচএসসি পরীক্ষার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ের প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির উপাদান ছিলো। এ পত্রের একটি প্রশ্নে বলা হয়েছিলো, নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিশ-বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির এক অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙ্গে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে।

জানা গেছে, এ প্রশ্ন প্রণয়ন করেছিলেন ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক প্রশান্ত কুমার পাল। আর প্রশ্নপত্রের চারজন মডারেটরের একজন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শ্যামল কুমার ঘোষ। আরেকজন কুষ্টিয়া ভেড়ামারা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক রেজাউল করিম। বাকী দুজন নড়াইলের সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তাজউদ্দিন শাওন, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুর রহমান। তারা বিসিএস সধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। 

বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায়ও সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন  করা হয়েছে। ঢাকা বোর্ডের বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় রচনামূলক অংশে সর্বনাম থেকে ৫ নম্বরের একটি প্রশ্ন থাকলেও সংশ্লিষ্ট অংশটি সিলেবাসে ছিলো না। কুমিল্লার বুড়িচং এরশাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক সিলেবাসের বাইরে থেকে এ প্রশ্ন প্রণয়নে জড়িত ছিলেন বলে মন্ত্রণালয়ের তদন্তে উঠে এসেছে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023739337921143