কুড়িগ্রামের চিলমারী সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র দিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার্থীরা বলছেন, ৫০০ টাকা না দিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের অ্যাডমিট কার্ড দিচ্ছে না। এদিকে মূল সনদ নিতেও এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের গুণতে হচ্ছে টাকা। শিক্ষার্থীরা নিয়মবর্হিভূতভাবে এ টাকা তোলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে কলেজে সরেজমিন গিয়ে টাকা নেয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে।
নওয়াব আলী নামে এক অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে কলেজে এসেছি। ৫০০ টাকার কমে মানছেন না। টাকা দিতে না পারায় ফেরত এসেছি। দেখি কি করা যায়।
নাইম নামে এইচএসসি পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ফরম ফিলাপের সময়ও বেশি টাকা নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এখন প্রবেশপত্র নিতে এসেছিলাম। কিন্তু ৫০০ টাকা চাচ্ছেন। তারা কি এই টাকা নিতে পারেন?
জাকির নামে এক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এবার এ কলেজেই ডিগ্রিতে ভর্তি হতে চাই। এ কলেজ থেকেই এইচএসসি বিএম পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছি। মূল সনদ (সার্টিফিকেট) নিতে বিএম শাখার আসাদ স্যারকে ফোন করেছিলাম। তিনি ৭০০ টাকা চাচ্ছেন। এখন এতো টাকা কিভাবে দেবো সেইটা ভাবছি।
স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা বদিউজ্জামান বদরুল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এই ঘটনা নতুন নয়। এটা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। আসলে এভাবে শিক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে টাকা নেয়া ঠিক না। অ্যাডমিট দিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে বেশ কয়েকজন সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী এসেছিলেন। চিলমারীতে অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা অর্থনৈতিকভাবে খুবই অস্বচ্ছল পরিবারের। তাদের পক্ষে এই টাকা দেয়া কষ্টসাধ্য। নিয়মবহির্ভূতভাবে এ টাকা নেয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চিলমারী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কবিরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
ওই কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাফিউল আলম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এদিকে চিলমারীর গোলাম হাবিব মহিলা ডিগ্রি কলেজেও এইচএসসি পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দিতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
আইরিন নামের এক পরীক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ৪০০ টাকা দিয়ে প্রবেশপত্র নিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিলমারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জিতেন্দ্রনাথ বর্মন বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রবেশপত্র বাবদ টাকা নেয়ার কোনো নিয়ম নেই। আমার কলেজে ফ্রিতেই প্রবেশপত্র দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাহের আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ সাহেবের সঙ্গে কথা বলবো। বিষয়টি আমার জানা নেই।