পিরোজপুরের নাজিরপুরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিরুদ্ধে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরমপূরণ ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের ফিয়ের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের ফি সর্বোচ্চ দুইশ টাকা হলেও এ বাবাদ দেড় থেকে দুই হাজার টাকা আদায় করছে স্কুলগুলো। আর এইচএসসির ফরম পূরণে ১ হাজার ১৬০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এ বাবদ দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের।
তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, উপজেলার দীঘিরজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির নিবন্ধন বাবদ বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকদের টাকা দেওয়ার প্রমাণ হিসেবে রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। রশিদ চাইলে শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের ব্যবসা বিভাগের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিন রায় ও তার বাবা বরুন রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ২ হাজার ৫০ টাকা দিতে হয়েছে। ওই টাকা আদায় করেছেন বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক অরুন পাল।
একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দীপ মন্ডল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
তবে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রশিদ ছাপানো না থাকায় শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়নি। তবে, এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
এছাড়া উপজেলার মাটিভাঙ্গার হাজী আব্দুল গনি, রঘুনাথপুর হক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্রীরামকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা করে ফি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয় জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এমন কোন লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি ১ হাজার ৭০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৬০ টাকা। কিন্তু ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের দ্বিগুনেরও বেশি টাকা দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ফি দেখিয়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে।
উপজেলার গাওখালী কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিতালী বেপারী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তার কাছ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য নেওয়া হয়েছে। একই অভিযোগ উপজেলার শহীদ জননী, ঘোষকাঠী, বৈঠাকাটা, রাজলহ্মীসহ বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে জানতে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুন গাইন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এইচএসসি’র মানবিক ও ব্যবসা শাখার জন্য ১ হাজার ৭০ টাকা ও বিজ্ঞান শাখার জন্য ১ হাজার ১৬০ টাকা করে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কোন কলেজের বিরুদ্ধে এর বেশি ফি নেওয়ার অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।