এক পদে দুই শিক্ষা কর্মকর্তা!

গাইবান্ধা প্রতিনিধি |

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার এক পদে দু’জন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।  

দু’জনেই উপজেলার উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন।

ফলে কার আদেশ মানবেন- এ নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন শিক্ষা কার্যালয় সংশ্লিষ্টরা।  
পাশাপাশি বিঘ্নিত হচ্ছে মাধ্যমিক পর্যায়ের উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষা এবং চলমান এসএসসি পরীক্ষার কার্যক্রম।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভূক্তভোগীদের সঙ্গে কথা এসব তথ্য জানা যায়, পাল্টাপাল্টি আদেশ তথা বদলি-স্থগিতাদেশের কারণে এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে কর্মরত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ এম মাহাবুবুল ইসলামকে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় বদলি করা হয়। তার স্থলে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনকে পদায়ন করা হয়। কিন্তু এ বদলির আদেশ বাতিল/স্থগিত চেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ ঢাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ এম মাহাবুবুল ইসলাম একটি পিটিশন দায়ের করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিচারক ওই বদলির আদেশটির ওপর স্থিতাবস্তা জারি করেন। অপরদিকে বোদা থেকে বদলি হয়ে আসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন একই দিন (গত ১১ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে তার যোগদান পত্র জমা দেন। সেই থেকে এক পদে সাদুল্লাপুর উপজেলায় দু’জন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের হিসাব রক্ষক মো. ফেরদৌস মণ্ডল জানান, মো. আবুল হোসেন চলমান এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। অপরদিকে এইচ এম মাহাবুবুল ইসলাম সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায়ই কার্যালয়েই অবস্থান করছেন। এছাড়া দু’জনই উপজেলার উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন।

সাদুল্লাপুর উপজেলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও মতিউন নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান জানান, বর্তমানে দু’জনই নিজেকে সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দাবি করছেন। কিন্তু কার আদেশ পালন করবেন- এনিয়ে বেশ দ্বিধায় পড়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। এতে মাধ্যমিক পর্যায়ের উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এইচ এম মাহাবুবুল ইসলাম জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত গত ২৮ আগস্টের স্মারক নং-৩৭.০২.০০০০.১০১.১৯.০০৩.১৮.২১৬৬৫ এর প্রজ্ঞাপন সূত্রে তিনি জানতে পারেন, তাকে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বদলির জন্য কোনো আবেদন করেননি। এছাড়া মাত্র নয় মাস আগে তিনি এ কর্মস্থলে (সাদুল্লাপুর) যোগদান করেছেন।

তিনি আরও জানান, তার কাছ থেকে একটি মহল অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিতে না পেরে তার স্বাক্ষর জাল করে এ বদলির আবেদন করেছেন। এ কারণে তিনি এ বদলির আদেশ বাতিল/স্থগিত করতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ ঢাকায় গত ১১ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৩৯৬/২০২২। বিচারক ওই দিনই ওই বদলির আদেশটিতে স্থিতাবস্থা জারি করেন। তারপর থেকে তিনি সাদুল্লাপুরে নিয়মিত কার্যালয় করছেন।  

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন জানান, তিনি গত ১১ সেপ্টেম্বর সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন। পরে এইচ এম মাহাবুবুল ইসলাম বদলির আদেশের বিরুদ্ধে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতের একটি স্টে অর্ডার নিয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে তার কাছে আসেন। এ সময় তিনি এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্বে স্থানীয় একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে যান। তারপর থেকে তিনি সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় দখল করে আছেন। বিষয়টি তিনি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপ-পরিচালক ও মহাপরিচালককে জানিয়েছেন।

গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে দু’জন কর্মরত থাকার সত্যতা স্বীকার করে জানান, বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.016489028930664