দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফটে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এক শিফটে সব স্কুল চালানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা শিক্ষকদের কেউ কেউ করলেও তা শিশুদের জন্য ভালো ফল নিয়ে আসবে। প্রতিবন্ধকতা থাকবেই, তবে শিশুদের জন্য সেগুলো কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষকদের হতে হবে আন্তরিক।
এক শিফটে সব স্কুল পরিচালনা করলে যেসব ইতিবাচক বিষয় লক্ষ্য করা যাবে তার মধ্যে প্রথমেই আছে, পাঠদানের সময় বাড়বে। এতে করে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর সময় বেশি পাবেন শিক্ষকরা। এতে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অধিক ফলপ্রসূ হবে। এক শিফটের স্কুলে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগও বাড়বে। খেলাধুলার সুযোগ বেড়ে যাবে, তাই দৈহিকভাবে পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এক শিফট করলে শিক্ষার্থীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
শিশুদের সাংস্কৃতিক মনোভাব তৈরির সুযোগ বেড়ে যাবে। কারণ সময় বেশি থাকবে। দুই শিফটের স্কুলগুলোতে সময়ের অভাবে সংগীত চর্চা, কবিতা আবৃত্তি, শ্রুতি লিখন, দেয়াল পত্রিকা তৈরি, বই পড়া ইত্যাদি অসম্ভব হয়ে পড়ে।
তবে সবকিছুর মূলে শিক্ষক। তাদের আন্তরিকতা বাড়াতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, অন্য দশটা চাকরির চেয়ে শিক্ষকতা আলাদা পেশা। তাদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাও দিতে হবে। পাশাপাশি মনিটরিং সিস্টেমের পরিবর্তনও জোরদার করতে হবে।
তবে একশিফট করতে হলে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকবে। এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হলে প্রাথমিক শিক্ষা ভৌত অবকাঠামো পর্যাপ্ত করতে হবে। শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত ১:২৫ করতে হবে। মিডডে মিল সব বিদ্যালয়ে নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত উপকরণ দিতে হবে।
গত ৩০ অক্টোবর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের জানান, জানুয়ারি থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফটে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। সারাদেশে একই সময়ে স্কুল শুরু ও শেষ করার চেষ্টা করা হবে। ক্লাসরুম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় নিয়ে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক শিফট চালু করা হবে।
লেখক : শাহীনূর আল আমিন, সভাপতি, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ