একই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ যোগ্যতা একই রকম হচ্ছে

রুম্মান তূর্য |

স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমন শিক্ষক পদগুলোর নিয়োগ যোগ্যতা একই রকম করা হচ্ছে। এসব পদে এখন প্রতিষ্ঠানের ধরন ভেদে আলাদা আলাদা যোগ্যতা নির্ধারণ করা রয়েছে। স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পৃথক তিনটি নীতিমালা হওয়ায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়। শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ ও এমপিওভুক্তি জটিলতায় পড়ে। সেই জটিলতার অবসানে অবশেষে বিদ্যমান তিনটি এমপিও নীতিমালায় সামঞ্জস্যতা আনার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ।

বিষয়টি নিয়ে দফায় দফায় সভা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৯ এপ্রিল এক সভায় দুই বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তারা কমন বিষয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতায় সামঞ্জস্যতা আনা নিয়ে আলোচনা করেন। সভায় একই বিষয়ের শিক্ষক পদে যোগ্যতার সামঞ্জস্য আনার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। 

গতকাল সোমবার দুপুরে শিক্ষা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, তিন এমপিও নীতিমালায় একই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতায় ভিন্নতা থাকায় শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ ও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছিলো। একই বিষয়ের শিক্ষক পদে স্কুলে এক যোগ্যতা, মাদরাসায় এক যোগ্যতা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরেক  যোগ্যতা ছিলো। কিন্তু এসব পদে নিবন্ধিত প্রার্থীরা ছিলেন একই। এ ধরনের বিষয়গুলোর যোগ্যতায় সামঞ্জস্য আসছে। এর আগের আলোচনার ফলে বাংলা-ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সংশোধন করা হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এ জটিলতা কাটানো গেলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ ও জটিলতা মুক্ত হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এনটিআরসিএ একটি কমন পদের জন্য প্রার্থীদের নিবন্ধিত করে। ওই পদে নিবন্ধিতরা স্কুল ও মাদরাসা বা কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ওই কমন বিষয়গুলোতে নিয়োগ পেতে আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু কিছু কিছু অসামঞ্জস্যতা থাকায় অনেক ক্ষেত্রে প্রার্থীরা নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও এমপিওভুক্ত হতে পারছে না। কমন পদগুলোর নিয়োগ যোগ্যতা এক হলে এ জটিলতা হবে না। 

জানা গেছে, স্কুল ও মাদরাসায় ধর্ম শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতায় অসামঞ্জস্যতা আছে। স্কুলের এ বিষয়ে শিক্ষককে ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক বলা হলেও মাদরাসায় এ পদটির নাম সহকারী মৌলভী। প্রার্থীরা বলছেন, মাদরাসার এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী মৌলভী পদের জন্য সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাযিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য না, তবে সর্বশেষ স্তর ছাড়া অন্যান্য স্তরের যেকোনো একটিতে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু স্কুলের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী একই শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে ধর্ম শিক্ষক হতে সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনো একটি তৃতীয় শ্রেণি বা বিভাগ গ্রহণযোগ্য। স্কুল, মাদারাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের আরো বেশ কয়েকটি পদে অসামঞ্জস্যতা আছে। এগুলোতে সামঞ্জস্যতা আনার চিন্তা করা হচ্ছে। আর মাদরাসার বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সংশোধন করা হয়েছে নীতিমালায়। সর্বশেষ এমপিও নীতিমালায় মাদরাসায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছিলো পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৩০০ নম্বরসহ স্নাতক। কিন্তু স্কুলের বাংলা ও ইংরেজির সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ৩০০ নম্বরসহ স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির সুযোগ পেতেন। তবে মাদরাসার এসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০ নম্বরের সংশ্লিষ্ট বিষয়সহ স্নাতক (সম্মান) বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী প্রার্থীরা নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির সুযোগ পেতেন না। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে এনটিআরসিএ বেশ কয়েকজন নিবন্ধিত প্রার্থীকে মাদরাসায় নিয়োগ সুপারিশ করে যারা পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ১০০ নম্বরের স্নাতক (সম্মান) বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। তাই এ দুই পদে নিয়োগ যোগ্যতা সংশোধন করে জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। এতে স্কুল ও মাদরাসায় বাংলা ও ইংরেজি শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতায় সামঞ্জস্যতা এসেছে। 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে - dainik shiksha কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি ১২শ’ শিক্ষার্থীর আতঙ্কে দিন কাটছে বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha বিলেত সফরে শিক্ষামন্ত্রী ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা - dainik shiksha ডলার সংকটে কঠিন হচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষা সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন - dainik shiksha সুপাড়ি চুরির সন্দেহে দুই ছাত্রকে নির্যা*তন ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল - dainik shiksha ডক্টরেট ডিগ্রি পেলো বিড়াল নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে - dainik shiksha নামী স্কুলগুলোর ফলে পিছিয়ে পড়ার নেপথ্যে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041050910949707