একমাত্র সন্তান রাজপ্রতাপকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের মারধরে অসুস্থ হয়ে প্রাণ হারানো রাজপ্রতাপ দাশের (১৫) পরিবারে আহাজারি থামছে না। একমাত্র সন্তান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা। কোনো সান্ত্বনায় তাদের শোক কমছে না।

এদিকে রোববারের ওই ঘটনায় রাজপ্রতাপের বাবা বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ শিক্ষককে আসামি করে আজ সোমবার কালিগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন– বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম পাড়, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুহিত, সহকারী শিক্ষক অবকাশ চন্দ্র খাঁ ও সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী। মামলার অন্য আসামি সহকারী শিক্ষক মনিরুল ইসলাম পলাতক।

রাজপ্রতাপ কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের হিজলা চণ্ডীপুর গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী দীনবন্ধু দাশের ছেলে। সে নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ত। রোববার বিদ্যালয় ভবনের ছাদে রাজপ্রতাপসহ কয়েকজন এক সহপাঠীর জন্মদিনের কেক কাটে। ওই সময় তারা টিকটক ভিডিও করছিল। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অবকাশ চন্দ্র খাঁ ও মনিরুল ইসলাম সেখানে গিয়ে তাদের নিষেধ করেন। তবে তর্ক করায় ওই সময় রাজপ্রতাপসহ চারজনকে মারধর করেন শিক্ষক অবকাশ চন্দ্র খাঁ। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে রাজপ্রতাপ বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পর বিকেলে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা রাজপ্রতাপের মরদেহ নিয়ে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেন। শিক্ষকের পিটুনিতে মৃত্যুর অভিযোগ তুলে তারা বিচার দাবি করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে রাজপ্রতাপের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হলে স্বজনের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, একমাত্র সন্তান হওয়ায় রাজপ্রতাপকে নিয়ে তার মা-বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল। বাবা দীনবন্ধুর ইচ্ছা ছিল ছেলেকে চিকিৎসক বানাবেন। সেই সন্তানের এমন করুণ মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না মা-বাবা। ছেলে নেই এ কথা তারা ভাবতেই পারছেন না। দু’জনই এখন পাগলপ্রায়। 

কালিগঞ্জ থানার ওসি মামুন রহমান জানান, রাজপ্রতাপের বাবার করা মামলায় এরই মধ্যে চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। পলাতক শিক্ষক মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতার দাবি শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha ‘রাজাকার’ স্লোগানের ব্যাখ্যা দিলেন উপদেষ্টা নাহিদ উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ - dainik shiksha উচ্চশিক্ষায় ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে - dainik shiksha ভিকারুননিসার সেই ফৌজিয়া এবার ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026359558105469