পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘একসময় র্যাবের কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। ২০০১ থেকে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দেশে বোমাবাজি, সন্ত্রাসের বিভীষিকা ছিল, তখন র্যাব হয়তো কিছু অ্যাক্সেস করেছে। বেশ অনেক বছর ধরে র্যাবের বাড়াবাড়ি কম। র্যাবের কয়েক শ লোকের প্রমোশন হয়নি, কিংবা তাদের শাস্তি হয়েছে। সুতরাং তাদের মধ্যে নিজস্ব দায়বদ্ধতার ব্যবস্থা আছে। গত তিন বছরে আমার জানামতে কোনো গুম হয় নাই। এটি একটি বড় উন্নতি।’
সোমবার (৯ জানুয়ারি) সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা রিয়ার অ্যাডমিরাল আইলিন লাউবাচারের সঙ্গে নিজ দপ্তরে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এটা আমরা বিশ্বাস করি না। কিন্তু আমাদের বিরুদ্ধে কিছু আইনি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তারা বিভিন্ন ধরনের বানোয়াট তথ্য দেয়। ফলে ব্যক্তিবিশেষ হয়তো প্রভাবিত হয়, কিন্তু আমার মনে হয় না কোনো সরকার এতে প্রভাবিত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাস করে, আমরাও সেটা বিশ্বাস করি। আমরা উভয় দেশই একই ধরনের মূল্যবোধ ও নীতিতে বিশ্বাস করি। আমাদের কোথাও দুর্বলতা থাকতে পারে। তারা যদি বন্ধু হিসেবে আমাদের সেটা বলে, তাহলে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ নেব। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট নিয়ে তারা একটি বক্তব্য দিয়েছিল এবং আমরা দেখেছি, সেখানে কিছু দুর্বলতা আছে। আমরা সেটি সংশোধন করেছি। এ ক্ষেত্রে আমরা খুবই পজিটিভ।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক না বাড়ানোর কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গঠনমূলক আলোচনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গত ৫০ বছরে আমাদের সুসম্পর্কের কথা বলেছেন এবং আগামী ৫০ বছরে আমরা আরও উন্নত অবস্থায় যেতে চাই। আমাদের সমুদ্র নিরাপত্তা, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, একসঙ্গে শান্তিরক্ষীতে কাজ করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ অনেক বিষয় রয়েছে।’
ভুল বোঝাবুঝিতে র্যাবে নিষেধাজ্ঞা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, কিছু ভুল বোঝাবুঝির জন্য র্যাব ও এর সাবেক ও বর্তমান সাত সদস্যের ওপর স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগামীতে তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) যেসব প্রতিনিধি বাংলাদেশে আসবেন তাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা হবে। তখন র্যাবের বিষয়ে তাদের সঙ্গে বোঝাপড়াটা পরিষ্কার হবে। গতকাল সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ‘সিটি শাহীন’ নিহত হওয়ার ঘটনায় আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি, এটা তদন্ত করার জন্য। তারা সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এর তদন্ত করেছে এবং সেই তদন্ত প্রতিদেনের বিষয়ে আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র সেটা ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে।’
নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘নট অ্যাট অল।’