‘ক্ষমতা না ছাড়লে সরকার এবার আর পার পাবে না’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রুহুল কবীর রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির আয়োজিত মিলাদ মাহফিলপূর্ব আলোচনায় দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই হুঁশিয়ারি দেন।
রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আপনি (ওবায়দুল কাদের) ৩৬ দিন পরে লেলিয়ে দেবেন… জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাচ্ছে। পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়া জনগণ কিন্তু কে যুবলীগ, কে ছাত্রলীগ, কে কত অস্ত্র নিয়ে এলো―ওটা আর দেখবে না।
জনগণের উত্তাল যে টেউ, এই টেউয়ের কাছে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র, কোনো অস্ত্র টিকতে পারে না। এই টেউয়ের মধ্যে প্লাবিত হয়ে যাবে আপনার যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আপনাদের তৈরি করার বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অনেকবার পার পেয়ে গেছেন। এবার আর পার পাবেন না।’
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘এখনো সময় আছে, আপনারা গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিন, পদত্যাগ করুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নির্বাচনের জন্য প্রতিষ্ঠা করুন। না হলে অনেকবার পার পেয়ে গেছেন। হত্যা করে, ক্রসফায়ার করে, গুম করে পার পেয়েছেন। এবার কিন্তু আর পার পাবেন না।
এবার পার পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। কে ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক), কে আনিসুল হক (আইনমন্ত্রী), কে হাছান মাহমুদ (তথ্যমন্ত্রী)…এটা কিন্তু জনগণ আর দেখবে না। পরিণতি ভয়াবহ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করুন।’
এর আগে গত বুধবার টঙ্গিতে শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৩৬ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছি বিএনপিকে। এই ৩৬ দিন বিএনপিকে দাঁড়াতে দেব না।’
এর জবাবে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি ছাত্রনেতা ছিলেন, আপনি রাজনীতিবিদ একটি দলের। কিন্তু আপনি তো আপনার সন্ত্রাসীদের নেতা। আপনার বক্তব্য থেকে বেরিয়ে আসে তাই…বিএনপি সঠিক পথে না এলে ৩৬ দিন পরে দেখে নেবেন। যুবলীগ, ছাত্রলীগকে নামাবেন।’
তিনি বলেন, ‘সঠিক পথ কোনটা? আপনাদের পথ। আমরা তো জানি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের আঘাত করা, তাদের কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ছাত্রলীগকে হত্যা করা, বুয়েটে মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ওপর আঘাত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডারবাজি, সিট বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগ একে অপরকে হত্যা করা…এগুলো তো আপনাদের সঠিক পথ। আমরা এই সঠিক পথ তো চিনি না। আমরা চিনি কিভাবে গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করতে হয়, কিভাবে সংবাদপত্রের নিশ্চিত করতে হয়, আমরা জানি কিভাবে মানুষের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হয়। সেগুলো জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন…।’
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে এই মিলাদ মাহফিল হয়। মিলাদ মাহফিলে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল খালেক, আবদুল বারী ড্যানি, উলামা দলের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ নেছারুল হক, সদস্যসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।