দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : তথ্য গোপন করে দ্বিতীয় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেওয়ার মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেছেন আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম মাহবুব আহমেদ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
এর মধ্যে দিয়ে এই মামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো বলে আসামির আইনজীবী মো. ওসমান গনি জানান। তিনি বলেন, ‘এদিন আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন সাবরিনা। শুনানির পর বিচারক সেই আবেদন নাকচ করে দিয়ে অভিযোগ গঠন করেন।’
করোনা মহামারির সময়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ আগস্ট বাড্ডা থানায় এই মামলা দায়ের করেন গুলশান থানা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ মমিন মিয়া। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এই চিকিৎসককে নিয়ে তদন্তে নেমে তার দুটি জাতীয় পরিচয়পত্রের সন্ধান পায় দুদক। দুদকের পক্ষ থেকে তা চিঠি দিয়ে ইসিকে জানানো হলে সাবরিনার এনআইডি দুটি ‘ব্লক’ করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মমিন মিয়া।
২০১৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করে আসা ডা. সাবরিনা জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী। সে কারণে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী নামেই তিনি পরিচিত।
সরকারি নথিপত্রে নাম সাবরিনা শারমিন হুসাইন থাকলেও এই চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ নামে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। আবার কর্মস্থলে তার কক্ষে নামফলকেও লেখা ছিল ডা. সাবরিনা আরিফ।
মামলার এজাহারে ইসি জানায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার জন্য আগারগাঁওয়ে এনআইডি উইংয়ের প্রকল্প অফিসে আবেদন করে আঙুলের ছাপ ও বায়োমেট্রিক তথ্য দেন সাবরিনা। নিয়ম অনুযায়ী তার তথ্য যাচাইয়ের জন্য গুলশান নির্বাচন অফিসকে জানানো হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সে বছর ২৭ এপ্রিল সাবরিনা গুলশান নির্বাচন কার্যালয়ে উপস্থিত হন। দলিল যাচাইবাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদনে তৎকালীন নির্বাচন অফিসার তাকে ‘ভোটার করা যেতে পারে’ বলে সুপারিশ করেন। এর ভিত্তিতে সেবার ভোটার হন সাবরিনা। পরে মহামারির সময়ে সাবরিনা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার নামে দুটি এনআইডি থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে চিঠি দেয় দুদক। সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর মামলা করে ইসি।
এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ জুলাই করোনার জাল সনদ দেওয়ার মামলায় সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুলসহ ছয়জনকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওই মামলায় সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন সাবরিনা।