দৈনিক শিক্ষাডটকম, গাজীপুর: যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) পদার্থবিজ্ঞানের ভিজিটিং প্রফেসর পদে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসান তাপস। চলতি বছরের মে মাস থেকে তিনি এমআইটিতে কোয়ান্টাম ম্যাটার ও কোয়ান্টাম টপোলজি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াবেন ড. জাহিদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর ফেসবুক আইডিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞানী ড. জাহিদ হাসান তাপস গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রয়াত সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী রহমত আলীর ছেলে। বর্তমান সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলীর বড় ভাই।
জাহিদ ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় সারা দেশে শীর্ষস্থান অধিকার করেন। তিনি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ওআইসির মোস্তফা পুরস্কারে ভূষিত হন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ভর্তি হন। তবে বেশি দিন ক্লাস করেননি। স্কলারশিপ নিয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন পদার্থবিজ্ঞানে। এরপর মাস্টার্স ও পিএইচডি করতে চলে যান স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
জাহিদ হাসান তাপস বর্তমানে বিখ্যাত প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক। অধ্যাপক জাহিদ ভাইল ফার্মিয়ন বা অধরা কণা আবিষ্কার করে বেশ সাড়া ফেলেন। একদল বিজ্ঞানীর সঙ্গে অধরা এ কণা আবিষ্কার করে দারুণভাবে প্রশংসিত হন। যা সাম্প্রতিককালে পদার্থবিজ্ঞানে একটি অনবদ্য আবিষ্কার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
জার্মান পদার্থবিদ হারম্যান ভাইল ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে এ বিষয়ে গবেষণা শুরু করেন। তবে অধ্যাপক জাহিদ হাসানের দল তাঁর ৮৫ বছর পর ভাইল ফার্মিয়ন আবিষ্কার করতে সক্ষম হন।
ফার্মিয়ন কণা আবিষ্কারের পর তাঁর নতুন আবিষ্কার টপোলজিক্যাল ক্যাগোমে কোয়ান্টাম চুম্বকের বৈশিষ্ট্য। তাঁর এই আবিষ্কারটির কথা প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘নেচার’–এ। ক্যাগোমে কোয়ান্টাম চুম্বক আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটার বর্তমানের চেয়ে শত গুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন হবে এবং মেডিকেল পরীক্ষা–নিরীক্ষার ক্ষেত্রে যুক্ত হবে অধিকতর প্রযুক্তি।
অধ্যাপক ড. জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ সদস্যের একদল গবেষক দীর্ঘ গবেষণার পর আবিষ্কার করতে সক্ষম হন ক্যাগোমে কোয়ান্টাম চুম্বক। পরবর্তীকালে তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২০ জন পিএইচডি গবেষকের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী বলেন, ‘বড় ভাই ড. জাহিদ হাসান তাপস ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান ও গবেষণার প্রতি ব্যাপক আগ্রহী। এ জন্য পারিবারিকভাবে বিজ্ঞানের ওপর পড়ার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। পরিবারের ভূমিকার কারণেই প্রতিটি সন্তান ভালো কিছু অর্জন করতে সক্ষম হয়।’