দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া চালুর আগেই আইনি জটিলতার শঙ্কা দেখছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা। গত অক্টোবরে এই বদলি চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বদলি চালু করতে একটি নীতিমালা করতে বলা হয়েছিলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। তবে সে নীতিমালার খসড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
এই নীতিমালা নিয়ে কর্মশালা আগামী ৩০ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এর আগে গত ২২ অক্টোবর এক সভায়, এমপিও শিক্ষকদের সমপদে বা সমস্কেলের শূন্যপদের বিপরীতে বদলির সুযোগ দিতে একটি রূপরেখা বা নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে এ নীতিমালার খসড়া করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো।
এ নীতিমালার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন,
বর্তমানের ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির প্রবিধানমালায় (২০০৯) শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ। একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ করা শিক্ষককে অন্য একটি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ দেয়া যাবে কি- যাবে না এ নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে। মামলা হলে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
অধ্যাপক নেহাল বলেন, এছাড়া যারা আগে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন, তারা ওই প্রতিষ্ঠানের জারি করা সুনির্দিষ্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে নিয়োগ পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ওই শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলি বা পদায়ন করা হলে তাদের নিয়োগে আইনগত ভিত্তি কতোটা বহাল থাকবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। অপরদিকে এনটিআরসিএর সুপারিশ নিয়ে যারা বিভিন্ন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছেন তারাও নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের চয়েজ বা পছন্দ দিয়েছিলেন। এনটিআরসিএর সুপারিশের প্রেক্ষিতে তাদের নিয়োগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ। তাই কোনো প্রার্থীর পছন্দ দেয়া প্রতিষ্ঠানের একটিতে সুপারিশ পেলে ওই প্রতিষ্ঠানের কমিটি তাকে নিয়োগ দেয়। তাকেও অন্য প্রতিষ্ঠানে অন্য নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অধীনে পদায়নের আইনগত সুযোগ আছে কি-না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে। এসব বিষয়ে কেউ মামলা করলে বদলি প্রক্রিয়া আইনি জটিলতায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মহাপরিচালক আরো বলেন, এ সমস্যাগুলো যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বদলি চালু হলে বিধি-বিধানের প্রেক্ষিতে কি কি জটিলতা হতে পারে তা খুঁজে বের করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করেছে। কমিটি কোন কোন বিধি-বিধানে পরিবর্তন বা সংশোধন আনলে জটিলতা ছাড়া শিক্ষকদের বদলি চালু করা যাবে তার একটি তালিকা করবে। মন্ত্রণালয় যদি সে বিধি-বিধানগুলোতে পরিবর্তন আনে তবে জটিলতা মুক্তভাবে শিক্ষকদের বদলি চালু করা সম্ভব হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি গঠিত হয় ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা প্রবিধানমালায়। এ প্রবিধানমালা অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ পরিচালনা পর্ষদ। সংশোধিত প্রবিধানমালাতেও নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ থাকছে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।