এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদর জন্য সুখবর আসছে। প্রায় ১১ বছর পর দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বর্তমানে তারা নামমাত্র উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও বাড়িভাড়া ভাতা পান। এরইমধ্যে বিষয়টি দেখার জন্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রবিউল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের উদ্যোগে শিক্ষকরা এমন সুবিধা পেতে যাচ্ছেন। কোনো শিক্ষক সংগঠনের দাবি, বিবৃতি বা আন্দোলনের মুখে নয়। যদিও গত ত্রিশ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে এমপিও শিক্ষকদের সরকার কিছু দেওয়ার খবর প্রথমে সাংবাদিকদের কাছ থেকে টেলিফোনে পেয়ে ওইদিনই বিবৃতি দেয় শিক্ষক সংগঠনগুলোর অধিকাংশ। হঠাৎ করে প্রেসক্লাবের সামনেও জড়ো হয় ১০/১২ জন । আবার সাংবাদিকদের অনুরোধ করে মিথ্যা লেখার জন্য। নেতারা অনুরোধ করেন, ‘ভাই লিখুন হাজার হাজার শিক্ষক মানবন্ধনে এসেছিলেন।’ ক্রেডিট নিয়ে কাড়াকাড়ি করে ননএমপিও এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক সংগঠনগুলো অধিকাংশই। ফলে অনেক দাবি পুরণ হয় না যথাসময়ে, ঝুলে যায়, প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে কেউ কেউ বরখাস্তও হন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে সর্বশেষ এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকদের চিকিৎসা ও বাড়িভাড়া ভাতা বেড়েছিল। বর্তমানে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মূল বেতনের সঙ্গে উৎসব ভাতা, চিকিৎসা ভাতা এবং বাড়িভাড়া ভাতা পান।এর মধ্যে মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা। চিকিৎসা ভাতা ৫০০ এবং বাড়িভাড়া এক হাজার টাকা পান। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের ভাতার টাকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতার মধ্যে ব্যবধান কম। বাড়িভাড়া ভাতায় ফারাক চোখে পড়ার মতো। এজন্য আপাতত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতা বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়ার ভাতা বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেবো।
তিনি বলেন, এতদিন আমরা অবকাঠামোর বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এবার শিক্ষকদের বাড়িভাড়া ভাতার জন্য বরাদ্দ চাইছি।
প্রসঙ্গত গত ৪ মে, সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেয়া শিক্ষামন্ত্রীর বরাতে এক পোস্টে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পার করেছে, তারা যেন মাধ্যমিক পরীক্ষা পর্যন্ত আসতে পারে এবং তারা যেন ঝরে না পড়ে, তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। আর শিক্ষকের মর্যাদা ও বেতনের বিষয়টি নিয়েও কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের পোস্টটিতে মন্তব্যের ঘরে অনেকে শিক্ষামন্ত্রীর এমন আশ্বাসকে দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। তবে, অধিকাংশ নামধারী শিক্ষকই নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন।
প্রসঙ্গত ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বাড়ানো হয়েছিল। তখন দেশের ২৬ হাজার ৪৭টি বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯০ জন এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ১ হাজার ৬০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ১৩ হাজার ২৫৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী এ সুবিধা পান। এছাড়া সহকারী গ্রন্থাগারিকদের পদ এমপিওভুক্তকরণ এবং স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের ভাতা দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করা হয়েছিল।