এমপিওভুক্তিতে জনপ্রতি দাবি দুই লাখ!

রুম্মান তূর্য |

নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এমপিওভুক্তিতে দুই লাখ ও কর্মচারী এমপিওভুক্তিতে লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন। আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার শেখ মুজিব কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। 

২০২১ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে প্রতিষ্ঠিত ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এই কলেজ এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু প্রতিজন শিক্ষক এমপিওভুক্তিতে দুই লাখ ও কর্মচারীর জন্য এক লাখ করে টাকা করে দাবি করেন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন।

ইতোমধ্যে অভিযোগ তদন্ত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের দুজন কর্মকর্তা। গত মঙ্গলবার তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

জানা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর গত বছরের জুলাই মাসে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

প্রতিষ্ঠানটির ২৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী ইতোমধ্যে এমপিওভুক্ত হয়েছেন। তারা বেতন ভাতা পাচ্ছেন। লিখিত অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের ২৯ জন শিক্ষক দাবি করেন, সে বছর জুলাই মাসে প্রতিষ্ঠানে এসে এমপিওভুক্তিতে দুই লাখ ও কর্মচারীর এমপিওভুক্তিতে এক লাখ টাকা করে দাবি করেন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেন।  

শিক্ষক কর্মচারীদের করা অভিযোগটি তদন্ত করতে গত ১১ জানুয়ারি কমিটি গঠন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তদন্ত কমিটির দায়িত্বে ছিলেন শিক্ষা ক্যাডারেরই দুই কর্মকর্তা। তারা হলেন শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. এনামুল হক হওলাদার ও সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কর্মকর্তারা সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ তদন্ত করেন। তদন্ত কমিটি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি, অধ্যক্ষ, শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মো. জামাল উদ্দিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, জুলাই মাসে যখন শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া চলছিলো তখন ডেপুটি কন্ট্রোলার কামাল হোসেন কলেজে আসেন। তিনি শিক্ষক মিলনায়তনে বসে প্রত্যেক শিক্ষকের কাছে দুই লাখ টাকা ও প্রত্যেক কর্মচারীর কাছে এক লাখ টাকা করে দাবি করেন। এমপিওভুক্ত করে দেয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দিতে হবে দাবি করে এ টাকা চাওয়া হয়। চাঁদার টাকা না দেয়ায় তিনি রাগান্বিত হয়ে শিক্ষকদের গালমন্দ করেন। 

অধ্যক্ষ আরো বলেন, আমরা এ বিষয়ে অভিযোগ জমা দিলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অভিযোগ তদন্তে কর্মকর্তারা এসেছিলেন। তারা আমাদের জবানবন্দি নিয়েছেন, আমরা তাদের তা লিখিতও দিয়েছি। আমাদের অভিযোগ শতভাগ সঠিক। তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্তকে রক্ষার চেষ্টা করতে পারেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা অভিযুক্ত কর্মকর্তার পক্ষে প্রতিবেদন দিলে আমি তাদের অভিযুক্ত করে মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে অভিযোগ দেবো।

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক হওলাদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এখন এর বেশি কোনো কিছু বলতে পারছি না। 

তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সার্বিক দিক যাচাই বাছাই করে তদন্ত করা হয়েছে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামাল হোসেনের সঙ্গে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া মেলেনি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের - dainik shiksha ‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক - dainik shiksha পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন - dainik shiksha প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002856969833374