এমপিওভুক্তির পর আগের শিক্ষকরা বাদ, তদন্ত শুরু

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর সাপাহারের তিলনী সরনী দাখিল মাদরাসা এমপিওভুক্তির পর প্রকৃত শিক্ষকদের বাদ দিয়ে ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে ওই পদগুলোতে অন্য ৩ জনকে এমপিওভুক্ত করানোর অভিযোগ উঠেছিলো। গতবছর মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত হয়। তবে অভিযোগ, এরপর আগের তিনজন শিক্ষককে বাদ দিয়ে অন্যদের ব্যাকডেটে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্ত করিয়েছেন সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. ফিরোজ হোসেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম ও শিক্ষা বিষয়ক জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘এমপিওভুক্তির পর আগের শিক্ষকরা বাদ, বেতন পাচ্ছেন অন্যরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। অবশেষে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসকের অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর তদন্তের দিন ধার্য করে ১১ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. জাকির হোসেন চিঠি পাঠান। চিঠি প্রাপ্তির পর অভিযুক্ত সুপার তার ছেলে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার কথা বলে সময়ের জন্য আবেদন করেছিলেন। এরপর আগামী মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) তদন্তের দিন ধার্য করে গত সোমবার (২ অক্টোবর) আবারও চিঠি পাঠানো হয় এবং ওই চিঠি দুই পক্ষকে পৌঁছে দিতে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুনকে বলা হয়েছে।


আরো পড়ুন : এমপিওভুক্তির পর আগের শিক্ষকরা বাদ, বেতন পাচ্ছেন অন্যরা


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হয় মাদরাসাটি। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে বিনা বেতনে যেসব শিক্ষক-কর্মচারীরা মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত করেছে তাদের মধ্যে তিন জন শিক্ষককে বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে অন্য তিন জনের নামে এমপিও করিয়েছেন মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. ফিরোজ হোসেন। গত ২০১৭ থেকে ২০২২  খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এ পূর্বের শিক্ষকদের তথ্য আপলোড করা হয়। ২০২২  খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর নতুন করে পূর্বের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে ভুয়া তিন জনের নাম দেন এবং তাদের এমপিওভুক্ত করান সুপার। এমপিওভুক্তির আগের শিক্ষকরা করোনার সময় সরকারি অনুদান পেয়েছেন। এমনকি তারা ২০২১  খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে পোলিং অফিসার হিসেবে ভোট গ্রহণও করেন। এরপরও তাদের বাদ দিয়ে অন্যদের ব্যাকডেটে নিয়োগ দিয়ে এমপিও করানোয় স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই সুপার আমাদেরকে বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভুয়া ওই তিন শিক্ষকের বেতন করিয়েছেন। এবিষয়ে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিলে, জেলা প্রশাসক স্যার তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) স্যারকে দায়িত্ব দেন। স্যার তদন্তের জন্য চিঠি পাঠালে সুপার কৌশলে সময়ের আবেদন করেন। সেখানে তিনি তার ছেলে অসুস্থ তাকে চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন কিন্তু তার ছেলে অসুস্থ নয় এরং তিনি এ পর্যন্ত তার ছেলেকে নিয়ে দেশের বাইরে যায়নি। তিনি জেলা প্রশাসক স্যারকে মিথ্যা বলেছেন এবং নিয়মিত মাদরাসায় যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদরাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. ফিরোজ হোসেনের মুঠোফোনে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এসব নিয়ে আপনার এতো মাথা ব্যাথা কেনো? এরপরই তিনি মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।

জানতে চাইলে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নাঈম হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট তার ছেলেকে নিয়ে ভারতে যাননি। তার ছেলেকে দেশেই চিকিৎসা করাচ্ছেন এবং তিনি নিয়মিত মাদরাসায় যাচ্ছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্যাহ আল মামুন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) স্যারের পাঠানো চিঠি পাওয়ার পর পরই মাদরাসার প্রধানকে ও অভিযোগকারী শিক্ষকদেরকে সেই চিঠি পৌঁছে দেয়া হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029399394989014