দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো পরীক্ষার্থী বা কক্ষ পরিদর্শনে দায়িত্বে থাকা কোনো শিক্ষক মুঠোফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধুমাত্র কেন্দ্রসচিব ছবি তোলা যায় না ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না এমন ফিচার ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যেকোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মুঠোফোন বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের গুজবমুক্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে পরীক্ষা নিতে এদিন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
সভায় সিদ্ধান্তের বরাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কেন্দ্র সচিব ছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্ত্রণালয় আরো বলছে, পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যে কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে, এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে এ পরীক্ষা আয়োজনে ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এসএসসি, দাখিল, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৩ হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস বা এ সংক্রান্ত গুজব ঠেকাতে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে নজরদারি। এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত গুজব বা এ কাজে তৎপর চক্রগুলোর কার্যক্রমের বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রশ্নফাঁস বা পরীক্ষার্থীদের কাছে উত্তর সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে ঘোষণা করা হবে কোন সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।
এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন জেলা পর্যায়ের ট্রেজারি ও উপজেলা বা থানা পর্যায়ে থানা হেফাজতে সংরক্ষণ করা হবে। থানা বা ট্রেজারি থেকে পুলিশ প্রহরায় প্রশ্ন কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
জানা গেছে, ট্রেজারি-থানা থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো মুঠোফোন ব্যবহার করতে পারবেন না এবং প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাঁচযুক্ত মাইক্রেবাস বা যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। তাছাড়া প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হবে। ট্যাগ অফিসার ট্রেজারি, থানা হেফাজত হতে কেন্দ্র সচিবসহ প্রশ্ন বের করে পুলিশ প্রহরায় সব সেটের প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২৫ মিনিট পূর্বে প্রশ্নের সেট কোড ঘোষণা করা হবে। সে অনুযায়ী কেন্দ্র সচিব, ট্যাগ অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তার স্বাক্ষরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট বিধি অনুযায়ী খুলবেন।
জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, আইন শৃংখলা এবং পরীক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।