এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টেস্ট পরীক্ষার ফি আদায়ের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি |

বাঞ্ছারামপুরে নির্দেশ অমান্য করে ২২৫ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টেস্ট পরীক্ষার জন্য ফি বাবদ ১৯২০ টাকা করে চার লাখ ৩২ হাজার টাকা নিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে রূপসদী জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ২১ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেও রহস্যজনক কারণে এখনও তিনি তদন্ত কাজ শুরু করেননি। এ ঘটনায় অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার রূপসদী জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর ২১০ জন নিয়মিত ও ১৫ জন অনিয়মিতসহ মোট ২২৫ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। করোনার কারণে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু সরকারের এ নির্দেশ অমান্য করে জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১৯২০ টাকা করে টেস্ট পরীক্ষার জন্য ফি নির্ধারণ করেন।

১৯ অক্টোবর থেকে এ টেস্ট পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বাড়িতে খাতা ও প্রশ্ন সরবরাহ করা হচ্ছে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। এরই মধ্যে পাঁচটি বিষয়ের পরীক্ষা সম্পূর্ণ হয়েছে। ২১ অক্টোবর বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সরোয়ারের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আবু তৌহিদকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি এখনও তদন্তের কাজ শুরু করেননি। যথারীতি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, আমাদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি বাবদ ১৯২০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এই ফির টাকা দিয়ে আমরা বাড়িতে পরীক্ষা দিচ্ছি। পরীক্ষার ফি দিতে আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। যেহেতু এসএসসি পরীক্ষা হবে না, তবে কেন এই টেস্ট পরীক্ষার দরকার।

অভিভাবক মফিরুল ইসলাম জানান, জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টেস্ট পরীক্ষার জন্য ১৯২০ টাকা নিয়েছেন। অথচ সারাদেশের পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে সরকার।

জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিল্লাল হোসেন জানান, ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদ স্যারের সঙ্গে কথা বলে এই টেস্ট পরীক্ষা নিচ্ছি। পরীক্ষা ফি ১৯২০ টাকা করে নির্ধারণ করা হলেও সবাই এই টাকা দিচ্ছে না। যে যেমন টাকা দিচ্ছে, আমরা তেমনি নিচ্ছি। মূলত ১৮ জন অস্থায়ী কর্মচারীর বেতন দিতে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে।

জামিদা মুনসুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, পরীক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়ন করতে এ পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার ফি ১৯২০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও অভিভাবকরা এক হাজার, দেড় হাজার, পাঁচশত টাকা যে যা পারে তেমনই দিয়েছেন। আমরা টাকার জন্য কোনো চাপ দিইনি।

উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৌহিদ বলেন, আমার সঙ্গে প্রধান শিক্ষক যোগাযোগ করেছিলেন পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি অনুমতি দিইনি। আমার কাছে প্রধান শিক্ষক টাকা নেওয়ার কয়েকটি রিসিট দিয়েছেন অভিভাবকরা।

ইউএনও মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সারোয়ার জানান, করোনাকালীন সময়ে কোনো পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। কয়েকজন অভিভাবক আমার কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। মাধ্যমিক কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত করবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003169059753418