রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২১ বিষয়ের এসএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এসব বেশ কিছু পরীক্ষার্থীঅনুপস্থিত ছিলেন। এসএসসির পরীক্ষায় বসতে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেও তারা পরীক্ষা দেননি। শিক্ষাবোর্ড বলছে, পরীক্ষার্থী কেনো পরীক্ষায় বাসলো না তার তথ্য চাওয়া হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে।
এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডের অনুপস্থিতির দিক থেকে রাজশাহী জেলা প্রথম। এরপরে রয়েছে নাটোর ও নওগাঁ জেলা।
জানা গেছে, বাংলা প্রথম পত্রে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯১ শতাংশ, বাংলা দ্বিতীয় পত্রে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ইংরেজি প্রথম পত্রে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ, গণিত বিষয়ে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ, পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া গার্হস্থ্যবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), কৃষি শিক্ষা, সংগীত, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, চারু ও কারুকলা বিষয়ে অনুপস্থিতির হার ১ দশমিক ১৮ শতাংশ, রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ ছিলো।
জানা গেছে, চলতি মাসের গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলা প্রথমপত্র দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথমদিনই ১ হাজার ৭১৯ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। রাজশাহী জেলা ২৯ হাজার ৫০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসেছে ২৯ হাজার ২০৯ জন। এই জেলায় অনুপস্থিত ২৯৪ শিক্ষার্থী। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ হাজার ৬২৫ পরীক্ষার মধ্যে ১৪ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষায় বসে। এ জেলায় অনুপস্থিত ১১৪ শিক্ষার্থী। নাটোরে ১৭ হাজার ৩০২ পরীক্ষার মধ্যে ১৭ হাজার ১২৯ জন পরীক্ষায় বসে। এই জেলায় অনুপস্থিত ১৭৩ শিক্ষার্থী।
নওগাঁয় ২২ হাজার ৬৩৩ পরীক্ষার মধ্যে ২২ হাজার ৩৬৭ জন পরীক্ষায় বসে। এই জেলায় অনুপস্থিত ২৬৬ শিক্ষার্থী। পাবনায় ২৮ হাজার ৪৫৭ পরীক্ষার মধ্যে ২৮ হাজার ১৯৪ জন পরীক্ষায় বসে। এই জেলায় অনুপস্থিত ২৬৩ শিক্ষার্থী। সিরাজগঞ্জে ৩২ হাজার ৯৮৭ পরীক্ষার মধ্যে ৩২ হাজার ৭০৮ জন পরীক্ষায় বসে। এ জেলায় অনুপস্থিত ২৭৯ শিক্ষার্থী। বগুড়ায় ৩৩ হাজার ৮৯৪ পরীক্ষার মধ্যে ৩৩ হাজার ৬৪০ জন পরীক্ষায় বসে। এই জেলায় অনুপস্থিত ২৫৪ শিক্ষার্থী। জায়পুরহাটে ৯ হাজার ১৭৬ পরীক্ষার মধ্যে ৯ হাজার ১০০ জন পরীক্ষায় বসে। এ জেলায় অনুপস্থিত ৭৬ শিক্ষার্থী।
গত বছর রাজশাহী বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৮ জন। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১০ হাজার ৯৬৮ জন। এবার ১ লাখ ১ হাজার ৫৩৫ জন ছাত্র এবং ৯৫ হাজার ৬৫ জন ছাত্র পরীক্ষায় বসছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৮৭ হাজার ৬৮৪ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ৯৯ হাজার ৫৮২ এবং ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৯ হাজার ৩৩৪ পরীক্ষা দিচ্ছে।
বাংলা-২য় পরীক্ষায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসেছিল ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৬৬ জন। পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৮ জন। সেই হিসেবে অনুপস্থিতির হার দশমিক ৯৫ শতাংশ। ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসে ১ লাখ ৮৬ হাজার ২০৪ শিক্ষার্থী। এই পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ১ হাজার ৮৯ পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ। ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসে ১ লাখ ৮৬ হাজার ২২৯ শিক্ষার্থী। এই পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ১ হাজার ৭৭০ পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। গণিত বিষয়ে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৪০ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। সেই হিসেবে অনুপস্থিত ১ হাজার ৮০৫ জন পরীক্ষার্থী। আর অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
পদার্থবিজ্ঞান, বাংলাদেশের ইতিহাস ও ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ের পরীক্ষায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৮৮৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসে ১ লাখ ৯১ হাজার ১২ শিক্ষার্থী। এ পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ১ হাজার ৮৭২ পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে অনুপস্থিতির হার দশমিক ৯৭ শতাংশ। এই পরীক্ষায় জয়পুরহাটের চার শিক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছে।
গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, সংগীত, আরবি, সংস্কৃত, পালি, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া, চারু ও কারুকলা বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪৭ হাজার ২১২ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬৮ শিক্ষার্থী। সেই হিসেবে ১ হাজার ৭৪৪ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। এতে অনুপস্থিতির হার দাঁড়ায় ১ দশমিক ১৮ শতাংশ।
সর্বশেষ রসায়ন, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ব্যবসায় উদ্যোগ বিষয়ে পরীক্ষায় ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৩২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষায় বসে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৮ শিক্ষার্থী। এই পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ১ হাজার ৪২৪ পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে অনুপস্থিতির হার ০ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মঞ্জুর রহমান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পরীক্ষার পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেয়া হবে। পরীক্ষার্থী কেনো পরীক্ষা দিলো না তার তথ্য চাওয়া হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে। সেই সব তথ্য পেলে কারণ জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষাবোর্ডের ২৭০টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এবছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬০০ জন। তাদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৫১ জন। আর অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ১০ হাজার ১৫৪ জন। এছাড়া ১৯৫ জন মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিচ্ছেন।