কুষ্টিয়া সদরের দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাই স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক মোছা. মরিয়ম খাতুন। তার বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে চলতি বছরের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) বাংলা-২ মূল্যায়নে গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। তিনি খাতার ভেতরে যে নম্বর দিয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। ম্যানুয়াল মার্কশিটে কাটা-ঘষা করেছেন। এছাড়া প্রধান পরীক্ষকের ঘরে নম্বর প্রদান করেছেন এবং ভুল বৃত্ত ভরাট করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. কামরুন নাহারের বিরুদ্ধেও খাতা মূল্যায়নে গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি খাতার প্রাপ্ত নম্বরে যোগফলে ভুল করেছেন। প্রাপ্ত ঘরে ভুল সংখ্যা তুলেছেন এবং ভুল বৃত্ত ভরাট করেছেন। ম্যানুয়াল নম্বরপত্রের ঘরে কাটাকাটি করেছেন।
এভাবে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের হেমনগর শশীমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান, নরসিংদী সদরের আব্দুর রহিম টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের ইংরেজি শিক্ষক সাদ্দাম খন্দকার, খুলনার দৌলতপুরের আফিল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ট্রেড ইন্স: মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ধর্মপুর এস আইডি (ভোক) স্কুল ও কারিগরি কলেজের ট্রেড ইন্স: মো. শামসুল আলমের বিরুদ্ধে খাতা মূল্যায়নে গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। খাতা মূল্যায়নে ভুল এবং কাজে গাফিলতির দায়ে এই ছয় পরীক্ষককে কারণ দর্শানোর শোকজ নোটিশ দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের এই শোকজের জবাব দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কেপায়েত উল্লাহর সই করা একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
পত্রে বলা হয়, ২০২৩ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে ভুল, লিথো কোড ছাড়া উত্তরপত্র গ্রহণ, ভুল বৃত্ত ভরাট, প্রাপ্ত নম্বর কম-বেশি হয়েছে। আপনাদের গাফিলতি বা অমনোযোগী হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের ফলাফলে চরম ক্ষতি হয়েছে। একজন পরীক্ষকের ক্ষেত্রে এটি সুস্পষ্ট কর্তব্যে অবহেলার শামিল, যা কখনোই কাম্য হতে পারে না।
সম্প্রতি প্রকাশিত এসএসসিতে চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭১ হাজার ১০৮টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছে। কুমিল্লা বোর্ডে এই সংখ্যা ২৭ হাজার। ঢাকা বোর্ডে ৭৩ হাজার। এভাবে প্রতিটি বোর্ডে হাজার হাজার শিক্ষার্থী খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘পরীক্ষার খাতায় মূল্যায়ন করতে গিয়ে শিক্ষকেরা কোনো না কোনো ভুল করেছেন। গাফিলতি করেছেন। এ কারণেই খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছি।’ গত বছর দেশের সব কটি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৮৫৪ জন পরীক্ষার্থী খাতা চ্যালেঞ্জ করেছিল। প্রকাশিত ঐ ফলে দেখা গেছে, ফেল করা অনেক শিক্ষার্থী শুধু পাশই নয়, অনেকে আবার জিপিএ-৫ পেয়েছে।
খাতা মূল্যায়নে উদাসীনার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অনেক সময় এসব উদাসীন শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়।