এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতির ধাক্কায় পিছিয়ে যাচ্ছে শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ১৮ লাখ ৬৫ হাজার প্রার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর আগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরুর আগে এ পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলো বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তপৃক্ষ (এনটিআরসিএ)। তবে পরিকল্পনা মাফিক এসএসসির আগে এ পরীক্ষা আয়োজন করা যাচ্ছে না। তাই ‘প্ল্যান বি’ অনুযায়ী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পর শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজনের কথা ভাবছেন কর্তারা।
জানা গেছে, প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য ১৯ লাখ প্রশ্ন ছাপতে সরকারি প্রেসের সিডিউল পায়নি এনটিআরসিএ। পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণও এটি। এ বছর ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা শুরু হবে। এ মুহূর্তে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপার কাজ করছে বিজি প্রেস। তাই শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারির প্রশ্ন ছাপার সুযোগ পাওয়া যায়নি।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি শুরুর হওয়ার পর তারা শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলির প্রশ্ন ছাপানো শুরু করতে পারবেন। তবে ২৪টি জেলা সদরের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে সেগুলো এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হবে। তাই এ পরীক্ষা চলাকালীন প্রিলি আয়োজন সম্ভব হবে না। ১২ মার্চ এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শেষ হবে। তারপর শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানায়, ১০ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান। এনটিআরসিএর পরিকল্পনা ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের সব প্রক্রিয়া ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দেই শেষ করা। সেজন্য দ্রুত প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে। তবে রোজার মধ্যে এ পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে মত-ভিন্নমত আছে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী এসএসসির আগে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হচ্ছে না। প্রেস এসএসসির প্রশ্ন ছাপার কাজে ব্যস্ত, তাই সময় দিতে পারেনি। এ কারণে এসএসসি পরীক্ষার পর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে।
রোজার মাসে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সঙ্গে রোজার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই রোজায় এ পরীক্ষা আয়োজনে কোনো বাধা নেই। তবে পরীক্ষা কবে নেয়া হবে সে তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি।
জানা গেছে, ২৪টি জেলায় শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। প্রচলিতভাবে শুক্র ও শনিবার এ পরীক্ষা আয়োজন করা হয়। প্রথম দিনে স্কুল পর্যায়- সাধারণ স্কুল-২ এর পরীক্ষা ও দ্বিতীয় দিনে কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা সাধারণত নেয়া হয়ে থাকে।
এনটিআরসিএ জানিয়েছে, শিক্ষক নিবন্ধনের আবেদন করা প্রার্থীদের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ের এ পরীক্ষায় প্রতিটি বিষয় থেকে ২৫ নম্বরের এমসিকিউ প্রশ্ন থাকে। দেশের ২৪টি জেলায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। প্রিলিমিনারিতে নূন্যতম ৪০ নম্বর পাওয়া প্রার্থী শিক্ষক নিবন্ধনের পরবর্তী ধাপ লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পান।
প্রসঙ্গত, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন থেকে শিক্ষক নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতোদিন বিষয়ের ভিত্তিতে প্রার্থীরা নিবন্ধিত হলেও এবার থেকে এমপিও নীতিমালা অনুসারে পদের ভিত্তিতে প্রার্থীদের নিবন্ধিত করা হবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।