কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিপ্তরের রংপুর অঞ্চলের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে সরেজমিন তদন্ত করেছেন। এসএসসির প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রধান শিক্ষকের রিমান্ড শুনানি হওয়া কথা আছে।
বুধবার দুপুরে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তে আসেন রংপুর অঞ্চলের পরিচালক আব্দুল মতিন, উপপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম। তদন্ত কর্মকর্তারা, বরখাস্তকৃত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ কে এম মাহমুদুর রহমান রোজেন, ওই কেন্দ্রের বর্তমান কেন্দ্র সচিব ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান পলাশ, পাশের কেন্দ্র ভূরুঙ্গামারী পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান আলী এবং নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে তারা এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত টিম এবং জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পৃথকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে তদন্ত করেছিলেন।
এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় প্রশ্নপত্র বাতিল হওয়া ২টি বিষয়ের মধ্যে জীববিজ্ঞান পরীক্ষা বুধবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার ৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৬৪৯ জন পরীক্ষার্থী এ বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান, মারুফ হোসেন মোজাম্মেল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তাদের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিলো, কিন্তু তারপরও পরীক্ষা ভালো হয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ এখনো ভালো রয়েছে।
প্রশ্নপত্র বাতিল হওয়া অপর বিষয় উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষা আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। আর স্থগিত হওয়া চারটি বিষয়ের পরীক্ষা নতুন রুটিন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে প্রশ্নফাঁসের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভূরুঙ্গামারী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আজাহার আলী জানিয়েছেন, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লৎফর রহমানসহ ওই পাঁচ শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লুৎফর রহমানকে তিন দিনের রিমান্ড নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন গ্রহণ করে ২৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
তিনি আরও জানান, প্রশ্নফাঁসে কারা কারা জড়িত এবং মামলা সংশ্লিষ্ট আরও তথ্য জানতে প্রধান শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এ জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানসহ পাঁচ শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো নহয়েছে। পলাতক রয়েছেন অফিস সহকারী আবু হানিফ। পুলিশ জানিয়েছে পলাতক আসামিকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।