হেলিকপ্টার তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন খুলনার কলেজপড়ুয়া এক ছাত্র। দেশীয় প্রযুক্তি আর চায়না ইঞ্জিনে তৈরি এই হেলিকপ্টার তৈরিতে কোটি টাকা নয় বরং খরচ হয়েছে মাত্র ২ লাখ টাকা।
খুলনার ফুলতলা উপজেলার জামিরা ইউনিয়নের ছাতিয়ানি গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান নাজমুল। তারা এক ভাই, এক বোন। বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। নাজমুল পড়াশোনা করছেন সরকারি বিএল কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষে। নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম খান পেশায় একজন কৃষক। তবে একটি মুদি দোকান আছে তার। দারিদ্র্যতার মাঝেও ছেলের উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহিত করতে যুগিয়েছেন অর্থ। ছেলের সাফল্যে আবেগাপ্লুত তিনি।
নাজমুল বলেন, ওয়েবসাইটের সহযোগিতায় জ্ঞান অর্জন করে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করেছি এই হেলিকপ্টার। হেলিকপ্টারের ইঞ্জিন ব্যয়বহুল তাই নিজস্ব মেধায় মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন মডিফাই করে এটি তৈরি করা হয়েছে। মা-বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে আজ নিজ চেষ্টায় সফল হয়েছি। হেলিকপ্টার প্রস্তুতকারী নাজমুল আরও জানান, হেলিকপ্টারের বডি তৈরিতে ব্যবহার করেছেন এস এস পাইপ। এছাড়া চায়না ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের আরপিএম সাড়ে ৬ হাজার থেকে বাড়িয়েছেন ৯ হাজার আরপিএমএ। এর পাখা সাড়ে ৮ ফিট লম্বা, চওড়া ২১ মিটার। পুরো হেলিকপ্টারটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ২২ ফিট। হেলিকপ্টারটি এক লিটার অকটেনে ১৮ থেকে ২০ মিনিট চলবে। যার সর্বো"চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার। তিনি বলেন, আশা করছি, পূজার পরেই পরীক্ষামূলকভাবে হেলিকপ্টারটি ওড়াতে পারব। আকাশে ওড়ার অপেক্ষায় নাজমুলের হেলিকপ্টার। তবে এর জন্য প্রয়োজন আরও নিরাপত্তা সরঞ্জাম। ইতিমধ্যে নাজমুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। হেলিকপ্টারটিকে আরও নিরাপদ ও আকাশে ওড়ার উপযোগী করে তোলার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এখন প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতার। স্থানীয়রা নাজমুলের হেলিকপ্টার উদ্ভাবনে উচ্ছ্বাসিত। নাজমুলের হেলিকপ্টার বানানোর পরিকল্পনাকে উৎসাহ যুগিয়েছেন এলাকাবাসী। বর্তমানে যন্ত্রটি কাজ করায় গর্বিত তারা। স্থানীয়রা বলেন, নাজমুল হেলিকপ্টার তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে। সে আমাদের এলাকার গর্ব। আমরা তার সফলতা কামনা করি।