দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: কণ্ঠরোধ করতে ভয়ের অন্যতম মাধ্যম সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এমন মন্তব্য করে এই আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়অরি) সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ-সিজিএস আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা এ দাবি জানান।
তাদের অভিমত, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সংশোধন করে যে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট করা হয়েছে তাতে তেমন পরিবর্তন আনা হয়নি। আইনটি বাতিলের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু বাতিল না করে নতুন রূপে এ আইনের বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু বলেন, আইন চলবে নিজস্ব গতিতে। সরকার থাকুক বা না থাকুক এর ব্যত্যয় ঘটানোর ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে যত আইন হয়েছে, সবই রাষ্ট্র পরিচালনার স্বার্থে। আমাদের জানতে হবে, আইনমন্ত্রী আইন তৈরি করেন না। আইন তৈরি করে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের জনপ্রতিনিধিরা। আমি বলব, বাংলাদেশ এক সময় ডিজিটাল ছিল না। যেদিন থেকে ডিজিটাল শুরু হলো তখন থেকে আমাদের আকাক্সক্ষা বেড়ে গেছে। প্রযুক্তির
বাংলাদেশ কমিউনিটস্ট পার্টি-সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নাম পরিবর্তন করে এখানে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট নামক আইন করা হয়েছে। আইনমন্ত্রী এ বিষয়ে অতীতে খোলামেলাই বলেছেন, আইন আসলে আগেরটাই আছে, এর কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু দাবিটা ছিল বাতিলের। তিনি বলেন, এমন একটা আইন করা হলো, যে আইনের অন্যতম ভিত্তি হলো ভয়। জুনায়েদ সাকী তার বক্তব্যে বলেন, এই আইনের প্রয়োগই অপপ্রয়োগ। এই আইনের লক্ষ্য হলো মানুষের কণ্ঠ রোধ করার জন্য, সরকারের হাতে প্রভূত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা। এ ক্ষমতা সরকার ছড়িয়ে দিতে পারে। এমন অস্পষ্ট সংজ্ঞা আইনটি জুড়ে আছে। নুরুল হক নুর তার বক্তব্যে বলেন, আমি মনে করি সাইবার নিরাপত্তা আইনের বেশকিছু ধারা রয়েছে-সেসব ধারায় রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিকরা বিপদে পড়তে পারেন। সংশোধন হওয়ার পরও এই আইনের অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকার হিসাবে বলা আছে, চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হলো। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট আমাদের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সেই হিসাবে এ আইনটি বাতিলযোগ্য। এটি একটি অপআইন। এ আইনের প্রয়োগই হচ্ছে অপপ্রয়োগ। সব আইন কিন্তু জনকল্যাণমূলক আইন নয়। বাংলাদেশে আমরা অনেক আইন দেখেছি। যেগুলো জনগণের বিরুদ্ধে গেছে।
সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় এ ওয়েবিনারে অংশ নেন, জাতীয় সংসদের হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু এমপি, সাবেক সংসদ-সদস্য গোলাম মাওলা রনি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জুনায়েদ সাকী ও ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।