দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: সারা দেশে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, এবার সে তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, নিবন্ধন অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টে এই তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ এবং আরো কিছু জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগ ওঠে।
এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদনও হয়। প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদগাঁও ইউনিয়নে অন্তত ৩৭০ জন রোহিঙ্গাকে জন্ম নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। এরপরও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় মোহাম্মদ হামিদ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা ৩৮ জন ভোটারের নাম উল্লেখ করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ এই ৩৮ জনের সবাই রোহিঙ্গা।
পরে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তদন্তে নেমে ঈদগাঁও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযোগের সত্যতা পান।
গত বছর ২৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগ ওঠা ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জনই রোহিঙ্গা। তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। ভোটার তালিকায়ও তাদের নাম আছে।
কিন্তু এই ৩৫ জন রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকায় রেখেই ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের তফসিল ঘোষণা করলে তিনি মোহাম্মদ হামিদ হাইকোর্টে রিট করেন। গত ২৪ এপ্রিল এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন। ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৩৫ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কক্সবাজারের কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তার তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন। ৬ জুনের মধ্যে তালিকা দাখিল করতে বলা হয়।
এ তালিকা না আসায় হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদন করেন রিটকারী। সারা দেশে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, সে তথ্য দিতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয় এ আবেদনে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায় রোহিঙ্গাদের এদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশ্রিত রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কারণে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। কেবল কক্সবাজার নয়, নোয়াখালী, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলায় রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
রোহিঙ্গাদের ভোটার করা নিয়ে চট্টগ্রামে ১৮টি মামলা হয়েছে। তা ছাড়া কক্সবাজারের একটি উপজেলায় ৩৪০ জন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে বলে তথ্য দেন এ আইনজীবী।