রাজধানীর মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্কুলেই কফি বিক্রি করেন এই শিক্ষক।
প্রতিষ্ঠানটির শরীরচর্চার শিক্ষক আনিসুল ইসলাম কলেজের তৃতীয় শ্রেণির স্টোর কিপার তরিকুল ইসলামকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনেই গালিগালাজ ও মারধর করেছেন। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী স্টোর কিপার তরিকুল ইসলাম সোমবার রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সোমবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক আনিসুল ইসলাম তাকে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সামনেই চড় থাপ্পর মেরেছেন ও গালিগালাজ করেছেন। স্কুল ক্যাম্পাসে শিক্ষকের কফি বিক্রির স্থান নিয়ে এ ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।
তরিকুল ইসলামের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের একটি কক্ষে রাখা পরিত্যাক্ত বই অন্য একটি কক্ষে সরিয়ে রাখতে অধ্যক্ষ নির্দেশ দেন। বইগুলো সরিয়ে যে কক্ষে রাখা হয় সে কক্ষটিতে শরীরচর্চা শিক্ষক আনিসুল ইসলাম কফি ও খাবার বিক্রির জন্য ব্যবহার করেন। বইগুলো সরিয়ে ওই কক্ষে রাখায় শিক্ষক আনিসুল ক্ষুদ্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগে জানিয়েছেন তরিকুল।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তরিকুল বলেন, ‘সোমবার দিবা শাখার টিফিন চলার সময় শিক্ষার্থীরা ভিড় করে স্কুলের ভেতরে অবস্থিত শিক্ষক আনিসুল ইসলামের কফিশপ থেকে টিফিন কিনছিলেন। বিষয়টি অধ্যক্ষ ড. মুন্সী শরীফ-উজজামান স্যারের নজরে আসলে তিনি স্কুলের ভেতর বিশৃঙ্খলা করে টিফিন বিক্রি করতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হন শিক্ষক আনিসুল। এর কিছুক্ষণ পরে অনুসন্ধান কক্ষে এসে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনেই আমাকে চড়থাপ্পর দিতে শুরু করেন। পরে অন্যান্য শিক্ষকরা এসে তাকে আটকান।’
তরিকুল জানান, বিষয়টি অধ্যক্ষ মহোদয়ের নজরেও এসেছে। উনার পরামর্শে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে আনিসুল ইসলামের কাথায় দুই জন শিক্ষক ঘটনা ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
যদিও তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগের বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি অভিযুক্ত শিক্ষক আনিসুল ইসলাম। এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সুস্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে একটু পরে কথা বলছি’।
পরবর্তীতে ওই শিক্ষকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি টেলিফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে ড. মুন্সী শরীফ-উজজামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। মুুন্সী শরীফ-উজ্জামান বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা। তিনি ডেপুটেশনে এই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসেছেন।