বিখ্যাত কবি ও শিশু সাহিত্যিক আসাদ চৌধুরীর জন্মদিন আজ। আসাদ চৌধুরী একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও আবৃত্তিকার। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কবি। সাহিত্যে তিনি গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার লোকায়ত জীবন সবই তার লেখায় স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলেছেন।
কবি আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি উলানিয়া হাই স্কুল থেকে ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে ছিলেন ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। এরপর ঢাকায় গিয়ে সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিল্প সাহিত্য বিষয়ক পাক্ষিক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘প্রচ্ছদ’ পরিচালনা ও উপস্থাপনা করতেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ভয়েজ অব জার্মানীর বাংলাদেশ সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর বাংলা একাডেমিতে চাকরি করে পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় আসাদ চৌধুরীর পদচারণা। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক গ্রন্থটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- তবক দেওয়া পান, বিত্ত নাই বেসাত নাই, প্রশ্ন নেই উত্তরে পাহাড়, জলের মধ্যে লেখাজোখা, যে পারে পারুক, মধ্য মাঠ থেকে, মেঘের জুলুম পাখির জুলুম, আমার কবিতা, ভালোবাসার কবিতা, প্রেমের কবিতা, দুঃখীরা গল্প করে, নদীও বিবস্ত্র হয়, টান ভালোবাসার কবিতা, বাতাস যেমন পরিচিত, বৃন্তির সংবাদে আমি কেউ নই, কবিতা-সমগ্র, কিছু ফল আমি নিভিয়ে দিয়েছি, ঘরে ফেরা সোজা নয় ।
তিনি ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদক লাভ করেন।
আসাদ চৌধুরী কানাডায় টরন্টোর আসোয়া লেকরিচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।