প্রায় ৩শ’ শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকার পরেও প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের ট্যাব পাচ্ছে না সাভারের মাহফুজা। অথচ একই শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে কম মেধাবী থাকার পরেও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া উৎসাহব্যঞ্জক ও গৌরবের পুরস্কারের ট্যাব পাচ্ছে একই শ্রেণীর অন্য দু’জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠান প্রধানের ভুলে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মাহফুজার মা-বাবা।
নবম শ্রেণীর মেধাবী শিক্ষার্থী মাহফুজার এমন স্বপ্ন ভঙ্গের ঘটনা ঘটেছে সাভারের আশুলিয়ার গুমাইল উচ্চবিদ্যালয়ে। আজ রোববার সাভার উপজেলা প্রশাসন মেধাবীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পুরস্কারের এই ট্যাব বিতরণ করবে। এ দিকে মাহফুজা পুরস্কারের জন্য সাভার উপজেলা থেকে আমন্ত্রণ না পেয়ে শনিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো সদুত্তর পায়নি। স্কুল থেকে বরং বলা হয়েছে নবম শ্রেণীতে যারা সাইন্স, আর্টস এবং কমার্স বিভাগ নিয়েছে তাদের মধ্য থেকেই পুরস্কারের জন্য তালিকা পাঠানো হয়েছে। অথচ মেধা পুরস্কারটি দেয়া হচ্ছে অষ্টম বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মেধাক্রম হিসেবে তাদের মেধাক্রমের বিবেচনায়। আর অষ্টম শ্রেণী থেকে যেসব শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের অনেকেরই এখনো বিভাগই চূড়ান্ত হয়নি। তাহলে এখানে সাইন্স, আর্টস ও কমার্সে ভর্তির রোল হিসেবে একজন শিক্ষার্থীর মেধা বিবেচনা হবে কিভাবে।
এ বিষয়ে মাহফুজার বাবা শাহেদ মতিউর রহমান জানান, আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণী থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রায় আড়াইশ’র অধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্মিলিত মেধা তালিকায় নবম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়েছে। অথচ একই শ্রেণীতে একই প্রশ্নে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে মাহফুজার চেয়ে প্রায় ১০০ নম্বর কম পাওয়া দু’জন শিক্ষার্থীকে মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাদের পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। দুঃখটা হচ্ছে আমার মেয়ে যেখানে মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছে সেখানে তাকে বাদ দিয়ে অনেক কম মেধাবী দু’জন শিক্ষার্থীকে কিভাবে মেধা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হলো।
গুমাইল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল খালেক মোল্লা এ বিষয়ে বলেন, অষ্টম শ্রেণী থেকে যারা নবম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়েছে আমরা তাদের মেধাক্রম বিবেচনা করিনি।
এই শিক্ষার্থীরা যেহেতু নবম শ্রেণীতে সাইন্স, কমার্স এবং আর্টস এই তিন বিভাগে নতুন করে ভর্তি হয়েছে তাই তাদের ভর্তি রোল অনুযায়ীই তালিকায় নাম পাঠিয়েছি। আমাদের এভাবেই তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। ভর্তির রোল তো মেধাক্রমে হয়নি তাহলে কেন এমনটি করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের তিন বিভাগের ছক দেয়া হয়েছে আমরাও সেভাবেই ছক অনুযায়ী তালিকা দিয়েছি।এ বিষয়ে গুমাইল উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যক্ষ কাদির দেওয়ার বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়তো বিষয়টি সেভাবে বুুঝতে পারেননি। আর তালিকার জন্য যেভাবে ছক দেয়া হয়েছে তিনি সেভাবেই তালিকা পাঠিয়েছেন। তবে এটা সত্য এখানে সঠিক মেধার মূল্যায়ন না করেই তালিকা পাঠানো হয়েছে। মাহফুজা যেহেতু সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে কাজেই এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে তার মেধার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।