করোনাকালে দেড়বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠনের নির্বাচন বন্ধ আছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন-উৎসব ভাতার টাকা তোলাসহ নানা কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে হচ্ছে। প্রতি ৬ মাসের জন্য স্কুল কলেজের অ্যাডহক কমিটি গঠনে ঢাকা বোর্ডে ফি দিতে হয় দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে। অন্যান্য বোর্ডেও বিভিন্ন হারে ফি রয়েছে। সব মিলে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকার মতো। এই উচ্চহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা। বাধ্যতামূলক না হলেও স্থানীয় এমপির ডিও লেটার, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং শিক্ষাবোর্ডে যোগাযোগ করতে করতে হয়রান হয়ে যাচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা অ্যাডহক কমিটি ও নিয়মিত কমিটির মেয়াদ করোনার সময়ের জন্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। এ দাবিতে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিষদ নেতারা ।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বোর্ড চেয়ারম্যানদের কাছে স্মারক লিপি জমা দেন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। সকালে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানরা ঢাকা বোর্ডে স্মারকলিপি নিয়ে সমবেত হন।
এসময় পরিষদের সভাপতি নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, গত বছরের মার্চ মাস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। ইতোমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিক কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছে। একাধিকবার অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। এ অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে গিয়ে আমাদের বিভিন্ন প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থাও ভালো না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর খরচ চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরও অ্যাডহক কমিটি গঠন করতে গিয়ে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে প্রতিনিধি মনোনয়ন, জেলা প্রশাসন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস থেকে অভিভাবক প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি, করোনার সময়ের জন্য পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত চলমান অ্যাডহক বা নিয়মিত কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করার।
তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থগিত হলে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জানি করা হয়েছে। আমরা অনুরূপ নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র চাই। আমরা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা এ দাবি জানিয়ে আমরা সব শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি দিচ্ছি।
এরপর শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। ফিরে এসে শিক্ষক নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে স্মারক লিপি পড়েছেন। প্রতিনিধি দলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব দুলাল চন্দ্র চৌধুরী, সহসভাপতি মো. মোস্তফা কামাল, মোহাম্মদ শফি উদ্দিন, রামকৃষ্ণ মিত্র, ফেরদৌস হেলাল, গৌতম কুমার সাহা, আব্দুর রশিদ, এনামূল হক, সুলতানা বেগম রত্না, যুগ্ম সম্পাদক আফজাল হোসেন, আলতাফ হোসেন নাজির, মঞ্জুর আলম, কোষাধ্যক্ষ মো. দারুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলার সভাপতি খুরশেদ আলম,গাজীপুর জেলার আহ্বায়ক আক্তার হোসেন, মুন্সিগঞ্জ জেলার সভাপতি মো. আল মামুন,নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহসহ অন্যান্য জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, বরিশাল,যশোর, রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর সংশ্লিষ্ট নেতরা স্মারক লিপি জমা দিয়েছেন। প্রত্যেক বোর্ডের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের উপস্থিতি ছিল ব্যাপক।