করোনাকালে শিক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে টিউশন ফি আদায়ের অভিযোগ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি |

করোনা মহামারির মধ্যেই অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের চাপ দিয়ে টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ (আরডিএ স্কুল এন্ড কলেজে) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে টিউশন ফি দিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসও করতে দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এতে অনেক অভিভাবকের সামর্থ্য না থাকলেও অনেকটা বাধ্য হয়েই করোনার মধ্যে পূর্ণ বেতন পরিশোধ করেছেন। এমন কর্মকাণ্ডে অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। 

অভিভাবকদের অভিযোগ, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের কোন ফি বকেয়া থাকে না। তাই এই প্রতিষ্ঠানটি বছরে লাখ লাখ টাকা লাভ করে। অথচ মহামারির এই দুঃসময়ে বিন্দুমাত্র ছাড় দিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। টিউশনসহ নানা ফি আদায় করে চলেছেন তারা। 

মজনু মিয়া, আব্দুল মান্নান, আশুতোষ, কারিমুল ইসলাম, শরীফ আহমেদসহ একাধিক ভুক্তভোগী অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মার্চ থেকে টিউশন ফি পরিশোধ করা হয়নি। কিন্তু চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই ওই প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় বকেয়া টিউশনসহ অন্যান্য ফি পরিশোধে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বার বার তাগিদ দিয়ে মোবাইলে মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। এমনকি তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়েও আদায়কারীরা বকেয়া রশিদ ধরিয়ে দিচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব ফি পরিশোধ করা না হলে বিলম্ব ফি ছাড়া এসব টাকা জমা নেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও জানান, করোনায় অধিকাংশ পরিবারই অথনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই মার্চ-এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বকেয়া টিউশন বাবদ এতগুলো টাকা একবারে দেয়া কারও পক্ষেই সম্ভব না। পর্যায়ক্রমে কিস্তি করে টাকা দিতে চাইলেও কর্তৃপক্ষ মানতে নারাজ। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবহনের বাস সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। কিন্তু টিউশন ফি’র সঙ্গে বাস ভাড়াও নেয়া হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। এমনকি এ যেন মরার ওপর খাঁরার ঘা-বলেও মন্তব্য করেন তারা। এরপরও বাধ্য হয়েই ধার-দেনা করে প্রতিষ্ঠানের সব বকেয়া পরিশোদ করেছেন বলে জানান অভিভাবকরা। তারা আরও বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে করোনার সময়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে। চাপ প্রয়োগ করে কোন ফি আদায় না করতেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই টিউশনসহ বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে। এধরনের কাজ অমানবিক বলে অখ্যায়িত করেছেন স্থানীয়রা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলেপল্লী উন্নয়ন একাডেমি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেখ আব্দুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, করোনায় টিউশনসহ অন্যান্য ফি আদায় করা যাবে না-সরকার বা মন্ত্রণালয়ের এমন কোন নির্দেশনা নেই। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের বেতনসহ অন্যান্য খাত থেকে যে টাকা আদায় করা হয় তা থেকেই শিক্ষকদের বেতন-ভাতা এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যয় মেটানো হয়। তাই দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন নিতে পারিনি। এজন্য শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়ে গেছে। ফলে বকেয়া টাকা পরিশোধ করার জন্য অভিভাবকদের ফি দিতে বলা হয়েছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051701068878174