প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, করোনার বিস্তার রোধে এখনই স্কুল ছুটি দেয়ার প্রয়োজন নেই। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে সবাইকে নজর দিতে তাগিদ দেন তিনি। দেশে করোনা আক্রান্ত ৩ ব্যক্তি শনাক্ত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে, এই পরিস্থিতিতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা প্রয়োজন আছে কী না, এক আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের খবরে উদ্বেগও জানিয়েছেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এ ভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। খাওয়ার আগে পরে হাত ধোয়া, হাচি কাশি থেকে দূরে থাকতে হবে। যথা সম্ভব বেশি জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া আদালতে ভীড় ঠেকাতে কি করা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিনিয়র আইনজীবীদের পরামর্শ চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
সোমবার (৯ মার্চ) আপিল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হলে প্রধান বিচারপতি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, প্রধান বিচারপতি সমস্ত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপিল বিভাগের এজলাসসহ চেয়ার টেবিল প্রতিদিন সকাল বেলা ডেটল দিয়ে সাফ করা হবে। সবাই হুঁশিয়ার থাকবেন।
প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘আমাদের বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নাই। কিন্তু সরকার এবং চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে যে সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তা স্টিকলি ফলো করা। যেমন হ্যান্ডশেক না করা, যতখানি সম্ভব ভীড় এড়িয়ে চলা।
করোনা ভাইরাস চিহ্নিত হওয়ার পরপরই বাজারে স্যানিটাইজার ও মাস্ক সংকট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
সোমবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কিত প্রতিবেদনের ওপর আদালতে শুনানি হয়। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এই শুনানি হয়।
সে সময় হাইকোর্ট বলেন, মাস্ক ব্যবহারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। তবে মাস্ক নিয়ে পেঁয়াজের মতো ব্যবসা হচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি তদারকি করা দরকার, কেউ যাতে বেশি দাম না নিতে পারেন এবং মজুত না করতে পারেন।
এদিকে, দেশে নতুন করে আর কারও শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়নি। ফলে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত সংখ্যা এখন পর্যন্ত তিনজনই রয়ে গেছে। সোমবার (৯ মার্চ) ১২টার দিকে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
আর গতকাল রোববার (৮ মার্চ) বিকেলে আইইডিসিআরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইতালি থেকে দেশে আসা দুই বাংলাদেশির শরীরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পাওয়া গেছে। এছাড়া তাদের সংস্পর্শে আসা আরও একজন এই ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। রক্তের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে তাদের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আরও পড়ুন :
হাইকোর্টের তদারকির আদেশ : করোনা ঠেকাতে মাস্ক নিয়ে পেঁয়াজের মতো ব্যবসা নয়
পরীক্ষা আরও ৪ জনের, নতুন করে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি : আইইডিসিআর
করোনায় স্কুল বন্ধ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ লাগবে : শিক্ষা উপমন্ত্রী
করোনা সম্পর্কে জানতে হটলাইন নম্বর
বাংলাদেশে তিন করোনা রোগী শনাক্ত
করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫ পরামর্শ
করোনার ঘোষণা দাও, অনুষ্ঠান পরে, আমি তোমাদের সাথে আছি : প্রধানমন্ত্রী
লাগবেনা মাস্ক, ৭টি বিষয় মানলেই কমবে করোনার ঝুঁকি
করোনা ভাইরাস : বুঝবেন কীভাবে, যাবেন কোথায়?
করোনায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ২৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ : মার্কিন দূতাবাস