কর্মকর্তাদের নকল স্বাক্ষরে জালসনদ বৈধ করার চেষ্টা শিক্ষকের

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর মান্দা থানা আদর্শ মহিলা স্কুল এণ্ড কলেজের শরীরচর্চা শিক্ষক পাপিয়া খান জাল সনদে চাকরি নিয়েছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এমপিওভুক্ত হয়ে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। 

উচ্চতর স্কেল পাওয়ার জন্য তৎপরতাও শুরু করেছিলেন। কিন্তু এ প্রক্রিয়াতেই জালসনদে চাকরির বিষয়টি ফাঁস হয়েছে। এদিকে জালসনদকে বৈধ করতেও কর্মকর্তাদের স্বাক্ষরজাল করেছেন ভুয়া সনদধারী শিক্ষক পাপিয়া। দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য উঠে এসেছে। 

এই সনদটি এবং কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল
এনটিআরসি’র সনদ যাচাই প্রতিবেদন

জানা গেছে, মান্দা থানা আদর্শ স্কুল এণ্ড কলেজের শরীরচর্চা বিষয়ের শিক্ষক পাপিয়া খান জাল শিক্ষক নিবন্ধের সনদ দিয়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৫ আগস্ট নিয়োগ নেন। সেবছর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি এমপিওভুক্ত হন। এ সময়ে এমপিও বাবদ অবৈধভাবে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন জাল সনদধারী শিক্ষক। 

প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সম্প্রতি পাপিয়ার এমপিওভুক্তির ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। তাই উচ্চতর স্কেল নেয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। এরই অংশ হিসেবে গত ৩০ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এনটিআরসিএতে সনদটি যাচাইয়ের জন্য পাঠান। গত ১৬ সেপ্টেম্বর শরীরচর্চা শিক্ষক পাপিয়া খানের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি জাল বলে যাচাই প্রতিবেদন দিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

এরপর জালসনদের ওপর একজন কর্মকর্তার জাল স্বাক্ষর ও ভুয়া সিল দিয়ে শিক্ষক পাপিয়া তার সনদটি বৈধ করার অপচেষ্টা করেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানকে দেয়া এক লিখিত আবেদনে পাপিয়া দাবি করেন, তার সনদটি ভেরিফাই করে দিয়েছেন এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা। এনটিআরসিএর সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলামের ভুয়া সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে জাল সনদরে একটি কপি ভ্যারিফাইড বলে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জামা দেন।

কিন্তু দৈনিক শিক্ষাডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম সেই স্বাক্ষরটি জাল করা হয়েছে বলে জানান। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এভাবে ফটোকপিও ওপর সিল দিয়ে এনটিআরসিএ কখনই নিবন্ধন সনদ ভেরিফাই করে না। সনদ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ভুলও হয়না। যদিও ভুল হয় সে ক্ষেত্রে একই স্মারকে প্রতিস্থাপিত সনদ যাচাই প্রতিবেদন দেয়া হয় তাহলে সা ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করা হয়। এখানে তিনি ভুয়া সিল ও জালস্বাক্ষর ব্যাবহার করেছেন।      

তিনি আরও জানান, সারাদশের জাল সনদধারী শিক্ষকরা বেপরেোয়া হয়ে উঠেছে। তারা সনদ বৈধ করতে প্রায়ই কর্মকর্তাদের স্বাকবষর জাল করছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, আমরা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষর চিঠি হাতে পেয়েছি। ঐ শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

জাল সনদধারী শিক্ষককে নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই জাল সনদধারী শিক্ষক পাপিয়া খান ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে নিয়োগ নিয়েছেন আর আমি নিয়োগ পেয়েছি ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে। তার নিয়োগদাতা অধ্যক্ষ অবসরে গিয়েছেন। তাই এ ব্যাপারে আর বেশি কিছু বলতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে জাল সনদধারী শিক্ষক পাপিয়ার কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এনটিআরসিএ কতৃপক্ষ আমার সার্টিফিকেট যাচাই করতে ভুল করেছে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর সার্টিফিকেটে চেক করে দিয়েছেন। তবে, যে কর্মকর্তার স্বাক্ষর তার কপিও উপর আছে তিনি পুরো বিষয়টি অস্বীকার করছেন জানালে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে লাইন কেটে দেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028529167175293