পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রোগী না থাকায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে হাসপাতালের মূল ফটক। জরুরি প্রয়োজনে কোনো রোগী আসলে পকেট গেট খুলে তাদের ভেতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। হাসপাতাল নির্মাণের পর এ ঘটনা এবারই প্রথম। রোগীদের ফটকে রাখা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে হাসপাতালে।
জানা যায়, করোনা আতঙ্কে লাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে ইনডোর ও আউটডোরের রোগী কমে যাওয়ায় বহিরাগত ও ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভীড় কমেতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা সচেতনায় এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বিপরীত চিত্র ক্লিনিকগুলোতে। ক্লিনিকগুলোর বর্জ্য যত্রতত্র ফেলায় বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী। তারা করোনা আতঙ্কের মধ্যে ক্লিনিক্যাল এই বর্জ্যে অন্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
শনিবার (২৮ মার্চ) দিনভর হাসপাতাল ও ক্লিনিকপাড়া ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত থাকলেও তারা নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে সহকর্মীদের সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাসপাতালে। আউট ডোর ও জরুরি বিভাগে রোগীর উপস্থিতি না থাকায় তাদেরও দেখা যায়নি নির্দিষ্ট আসনে। ডাক্তারদেরও অনেক রুম তালাবদ্ধ। করোনা আতঙ্কের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকার পরও বিকল্প পথে দু’একজন রোগী আসলেও ডাক্তারের দেখা পেতে তাদের কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
তবে বিপরীত চিত্র কলাপাড়ার ক্লিনিকগুলোতে। ডাক্তাররা এখানে নিয়মিত বসায় এসব ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা সেবা চলছে। এ কারণে এসব ক্লিনিকের ফেলা বর্জ্য এখন এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লিনিকে ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, স্যালাইন পাইপ, রক্তমাখা তুলা ব্যান্ডেজসহ অন্যান্য বর্জ্য ডাম্পিং না করে ফেলা হচ্ছে সরকারি স্থাপনার ভিতরে ও রাস্তার পাশে। এতে ওই সড়কে চলাচল করা মানুষ পড়েছে দুর্ভোগে। প্রচণ্ড দুর্গন্ধে এসব ময়লা ফেলা সড়ক দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ক্লিনিক পাড়ার এ বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট যায়গায় ফেলে পুড়িয়ে ফেলা উচিত। এতে রোগব্যাধি ছড়াতে পারবে না।
দুটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত আমির হোসেন ও ঝর্ণা বলছেন, তারা তাদের বর্জ্য টাকা দিয়ে বাইরে ফেলছেন। এখন তারা কোথায় ফেলছে কিংবা পুড়িয়ে ফেলছে কিনা তা তারা জানেন না। তবে তারা নদীতেও এই বর্জ্য ফেলছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগী ও চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ হাসপাতালে ভীড় না করতে পারে এজন্য মূলগেট আটকে রাখা হচ্ছে। রোগী আসলে গেট খুলে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, কলাপাড়ায় করোনা ঝুঁকিতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশ ফেরত ৬৯ জনের কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ শনিবার শেষ হয়েছে। বাকি ২৮ জনের মেয়াদ শেষ হবে ৫ এপ্রিল।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের বর্জ্য ডাম্পিং করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ক্লিনিকের বর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে পুড়িয়ে ফেলা উচিত।