ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের বোটানি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আছাদুজ্জামান নূর তুরাগকে (২০) কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (১১ অক্টোবর) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের একটি মেহগনি বাগান থেকে তুরাগের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আছাদুজ্জামান নূর তুরাগ শহরের মধ্য আলীপুর এলাকার আলাউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তুরাগ সবার ছোট।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার সন্ধ্যার পরে সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকার জামাল মোল্যা নামের এক ব্যক্তির মেহগনি বাগানে একটি ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দেয়। পরে চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে থানায় ফোন দিলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
তুরাগ বিকালে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজছিল। একটি মরদেহ পড়ে রয়েছে এমন খবর পেলে তুরাগের ভাই আবুল কালাম আজাদ সেখানে গিয়ে তার ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করে।
তুরাগের ভাই আজাদ বলেন, আমি সকালে ব্যাংকে চলে আসি। এরপর আমার স্ত্রীকে দুপুরে ফোন দিলে সে জানায় তুরাগ দুপুরের পর বাসা থেকে বের হয়েছে। আমি তুরাগের মোবাইলে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আমি ও পরিবারের লোকজন সকলেই তুরাগকে খুঁজতে থাকি। একপর্যায়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পাই গোবিন্দপুরের একটি মেহগনি বাগানের মধ্যে একটি মরদেহ পড়ে রয়েছে। খবর পেয়ে গিয়ে দেখি আমার ভাইয়ের মরদেহ।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন, শৈলেন চাকমা ও কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিলসহ সিআইডির ক্রাইমসিন ও পিবিআই’র কর্মকর্তাবৃন্দ।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল বলেন, মরদেহের বাম হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন, ডান হাতে কোপের দাগ, দুই হাঁটুতে কোপের আঘাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। নির্মমভাবে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহর সুরতহাল রিপোর্টে কাজ করছে পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হবে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে কলেজছাত্র তুরাগকে। এই হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ ইতোমধ্যেই অভিযান শুরু করেছে।