রাজধানীর পল্লবীতে কলেজ পড়ুয়া তিন বান্ধবী বাসা থেকে বের হয়ে উধাও হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে তারা কলেজ পোশাক পরে বাসা থেকে বের হয়। পরে তারা আর ফিরে আসেনি। তারা প্রত্যেকে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এরা মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, পল্লবী ডিগ্রি কলেজ ও দুয়ারিপাড়া কলেজের ছাত্রী। পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় একজন ৬ লাখ টাকা, একজন ৭৫ হাজার টাকা এবং অপরজন আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। তারা তাদের স্কুল সার্টিফিকেট ও ব্যবহার্য মূল্যবান সামগ্রীও নিয়ে গেছে।
পরিবারের দাবি, বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের প্রলোভিত করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। এজন্য তারা বাসা থেকে মূল্যবান জিনিস চুরি করে পালিয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় নিখোঁজদের মধ্যে একজনের মা পল্লবী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের নাম তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়া। এর মধ্যে জিনিয়া টিকটকে পরিচিত মুখ। আর তরিকুল ও রকিবুল আপন দুই ভাই। পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তরিকুল ও তনয় নামে দুই জনকে আটক করেছি। দুই জনই কলেজছাত্র। তারা নিখোঁজ ঐ তিন শিক্ষার্থীর বন্ধু। তাদের থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অভিযোগকারী জানান, তার মেয়ে ও মেয়ের দুই বান্ধবীকে বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘরছাড়া করেছে একটি নারী পাচারকারী চক্র। পরিবারের কাউকে কিছু না বলে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে সবাই নিজ নিজ বাসা থেকে একসঙ্গে বের হয়। বের হওয়ার সময় প্রত্যেকে বাসা থেকে কয়েক লাখ টাকা, গহনা, স্কুল সার্টিফিকেট ও দামি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায়।
নিখোঁজ আরেক শিক্ষার্থীর বড় বোন (যিনি একজন অ্যাডভোকেট) বলেন, তিন বান্ধবীকে বিদেশে নেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছে। এজন্য তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সবাই কলেজ ড্রেস পরে বের হয়েছে। তারা কলেজের ব্যাগও নিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে প্রতিবেশী তরিকুল, রকিবুল ও জিনিয়া জড়িত। এর মধ্যে তরিকুল তার বোনের সঙ্গে প্রায়ই কথা বলত। তরিকুল তাকে বলত, সে অনেক বড় হ্যাকার। আর অনেক বড় কোম্পানির মালিক। আমেরিকায় লোক পাঠায়। তার বোনও বাসায় এসে তাকে বলেছে, ‘আপু তরিকুল তোমাকে তার কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার পদে চাকরি দেবে।’
তিনি আরো জানান, ঘটনার পর আমরা তরিকুলের বাসায় গিয়ে জানতে পারি সে ও তার বড় ভাই রকিবুল বৃহস্পতিবার থেকেই বাসায় নেই। তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ। জিনিয়া নামে তরিকুলের এক টিকটক বান্ধবী রয়েছে। জিনিয়া তার ছোট বোন ও তার বান্ধবীদেরও পরিচিত। তিনি বলেন, ‘জিনিয়ার বাসায়ও গিয়েছি ওদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে। কিন্তু জিনিয়া দেখা করেনি আর তার পরিবারের সদস্যরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমরা মনে করছি তরিকুল ও জিনিয়ার পরিবার এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা জানে আমার বোন ও তার বান্ধবীরা কোথায় আছে।’