কাকরাইল থেকে অপহৃত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার

চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি |

চারদিন নিখোঁজ থাকার পর চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার একটি আম বাগান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারের সময় তার হাত-পা ও মুখ বাঁধা ছিল।  বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকার তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার এই শিক্ষার্থীকে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন কাকরাইল এলাকা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তারপর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে চারদিন পর ওই আম বাগানে ফেলে দিয়ে যায় অপহরণকারীরা। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানিয়েছে- বৃহস্পতিবার রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর বাজার সংলগ্ন একটি আমবাগানে হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় ওমর ফারুককে দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে জাতীয় জরুরি সেবা- ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চৌধুরী জোবায়ের আহমেদ বলেন, গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদের সামনে থেকে অপহৃত হন ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ। তার নাকে কাপড় দিয়ে অপহরণ করা হয়। পরে মুসলিমপুরের স্থানীয়রা হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানায় আনা হয়। পরে ঘটনার বিস্তারিত শুনে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তার চাঁপাই নবাবগঞ্জের এক পরিচিত লোকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ তার পরিচিত চাঁপাই নবাবগঞ্জের ইসলামী বক্তা মাওলানা আবু সাঈদ আরিফের কাছে রয়েছেন। মাওলানা আবু সাঈদ আরিফ বলেন, নিখোঁজ ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ্‌র ভগ্নিপতি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সেই সুবাদে তার পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে আমার বাসায় রেখেছি। পরে তাকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেবো। তিনি বলেন, ২৮ তারিখ থেকে তার সন্ধান আমরা পাচ্ছিলাম না। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

ওমর ফারুক আব্দুল্লাহ ফেসবুক লাইভে গতকাল বলেছেন, পিরোজপুর জেলায় আমার বাড়ি হলেও মা-বাবা থাকেন ঢাকার কেরানীগঞ্জে। আর আমি একযুগ ধরে খিলগাঁও ও বনশ্রী এলাকায় থাকি। ২৭ তারিখ কেরানীগঞ্জ থেকে খিলগাঁও যাওয়ার পথে কাকরাইলে নেমেছিলাম। সে সময় এই ঘটনা ঘটে। কাকরাইল থেকে আমাকে সুকৌশলে উঠিয়ে নেয়া হয়। অপরহরণকারীরা বিশেষ এক ধরনের মেডিসিন দিয়ে আমার অনুভূতি শূন্য করে দেয়। আমি কোথায় যাচ্ছি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। ওই রাতে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। সকালে বুঝতে পারি আমি কারো কব্জায় আছি। প্রথমে ধারণা করেছিলাম প্রশাসনের লোকজন হতে পারে। তারা সবাই ইংরেজি ও হিন্দিতে কথা বলছিল। বাংলাতে কিছুই বলতো না। তখন বুঝতে পারলাম পুলিশ বা ডিবি’র হাতে পড়ি নাই। ভিন্ন কোনো চক্রের হাতে পড়েছি।  তিনি বলেন, পরের রাতে তারা আমার পরিবারকে ফোন করে ১০ লাখ টাকা আনতে বলে। টাকা না পেলে ওপারে পাঠিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। ওপার বলতে তারা কি বুঝাতে চেয়েছে জানি না। দুনিয়ার ওপারে নাকি বাংলাদেশের ওপার এটা জানি না। তারা আমার ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস ও  মেসেজ দিয়ে টাকা চাইতে বলতো। তারা আমাকে যেভাবে বলতো সেভাবে বলতাম। টাকা চাওয়ার জন্য মারধরও করতো। উদ্ধার হওয়ার পর বুঝতে পারলাম তারা আমাকে ওপার বলতে কি বুঝিয়ে ছিল। তারা আমাকে চরের বালুর মধ্যেও হাঁটিয়েছে। আমার জুতার মধ্যে বালু লেগেছিল। তারা ৫/৭ জন ছিল। আমাকে চারদিন গাড়িতে রেখে ঘুরানো হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র একদিন খাবার দিয়েছিল।

এদিকে ওমর ফারুক ঢাকার কাকরাইল এলাকা থেকে অপহৃত হয়েছেন এমন কোনো তথ্য নেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের কর্মকর্তাদের কাছে। এই জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ গতকাল বিকালে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অপহরণের কোনো খবর আমাদের কাছে নাই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় - dainik shiksha বিসিএসে আনুকূল্য পেতে যেচে তথ্য দিয়ে বাদ পড়ার শঙ্কায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ - dainik shiksha বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাকে উপাচার্যের পিএস নিয়োগ ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছেন এক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ - dainik shiksha ছাত্র আন্দোলনে নি*হত ৯ মরদেহ তোলার নির্দেশ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033128261566162