আন্দোলন স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে আগামী শনিবার থেকে কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি এবং আমাদের স্যারদের প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজে ফিরছি। তবে কাজে যোগ দেওয়ার আগে শনিবার আমরা আমাদের ইউনিট হেডদের কাছে একটি স্মারকলিপি দেবো। সেখানে আমাদের চুক্তির কয়েকটি বিষয় থাকবে। সেই চুক্তির সবগুলো বাস্তাবায়ন করতে হবে। যদি না করে আমরা আবারও আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা ও তা নিয়মিত পাওয়ার দাবিতে ৯ জুলাই থেকে আন্দোলনে নামেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) এর অধিভুক্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
আন্দোলনের মধ্যে ১৬ জুলাই স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল শিক্ষার্থীদের (ট্রেইনি চিকিৎসক) ভাতা পাঁচ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়।
পাঁচ হাজার টাকা ভাতা বাড়ানোর চারদিন পর সংবাদ সম্মেলনে এসে বলা হয়েছে, ১৭ জুলাই বিএমএ প্রেসিডেন্ট ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউ ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন, মহাসচিব কামরুল হাসান মিলন এবং ডিজিএমই ডা. টিটু মিয়া’র সঙ্গে আমাদের প্রতিনিধি দলের মিটিং হয়েছে।
সেই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, ভাতা ২০ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা করা হবে এবং জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে। এছাড়া ভাতা প্রতি মাসে দেওয়া হবে এফসিপিএস ট্রেইনিদের। সাপ্তাহিক দুই কর্মদিবস ছুটি দেওয়া হবে, প্রাইভেট প্র্যাকটিসে কোনো বাধা দেওয়া হবে না (সিন্ডিকেট মিটিং এ পাসের পর), আন্দোলনরত অবস্থায় একাডেমিক অনুপস্থিতির জন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এবং জানুয়ারি মাস থেকে আরেক ধাপ ভাতা বাড়ানো হবে।
পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তাবায়ন এবং বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা আগামী শনিবার থেকে কাজে ফিরবো। কাজে যোগ দেওয়ার আগে শনিবার সকালে আমরা আমাদের ইউনিট হেডদের কাছে আমাদের চুক্তির বিষয়গুলো স্মারকলিপি আকারে জমা দেবো। আমাদের চুক্তির সবগুলো বিষয় বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি বাস্তবায়ন করা না হয়, আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।
কোনো চাপে পড়ে আন্দোলন স্থগিত করা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. জাবির হোসেন বলেন, না। এখানে কোনো ভয়ভীতি নেই। আমরা আমাদের শিক্ষকদের কথার ওপর আস্থা রেখে কাজে ফিরছি। আমরা বিশ্বাস করি, তারা তাদের কথার মূল্য দেবেন এবং কথার বরখেলাপ করবেন না।
চুক্তি লিখিত নাকি মৌখিক হয়েছে, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, চুক্তি মৌখিক হয়েছে প্রথমে। মিটিংয়ে বিএমএ প্রেসিডেন্ট ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমইউ ভিসি ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন, মহাসচিব কামরুল হাসান মিলন এবং ডিজিএমই ডা. টিটু মিয়া উপস্থিত ছিলেন। আমরা আমাদের এই স্যারদের প্রতি বিশ্বাস রেখে কাজে ফিরছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী, সহ-সভাপতি ডা. ইমরান সিকদার, ডা. ফরহাদ মিয়া এবং ডা. পার্সা রহমান।