কারিকুলাম ও মাদরাসা শিক্ষাসহ শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য সংস্কারের প্রস্তাব

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

শেখ হাসিনা সরকার প্রণীত কারিকুলাম থেকে বের হয়ে একটি বাস্তবায়নযোগ্য পরীক্ষা পদ্ধতি এবং সবার জন্য বোধগম্য পাঠ্যবই প্রণয়ন, মাদরাসা শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণসহ বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থার নানাবিধ দিক সংস্কারের সুপারিশ করেছেন শিক্ষা অধিকার সংসদের সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন। 

শিক্ষার নানাবিধ এসব দিক সংস্কারের প্রস্তাবনা নিয়ে আজ আত্মপ্রকাশ করে শিক্ষা অধিকার সংসদ সংগঠনটি।  দৈনিক আমাদের বার্তা সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ।

তিনি বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন বাংলাদেশের সরকার শিক্ষার মৌলিক কিছু সংস্কার করবেন। কিন্তু আমরা আসলে সেরকম উদ্যোগ দেখছি না। সে প্রেক্ষিতেই আমরা কিছু সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করছি। নতুন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট মাথা রেখে শিক্ষার প্রত্যেকটি দিক- কারিকুলাম, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা এবং মাদরাসা শিক্ষা নিয়ে আমরা সংস্কার প্রস্তাব করবো।

এই শিক্ষা গবেষক আরো বলেন, আমরা প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার বিভিন্ন ধারা নিয়ে স্পেসিফিক প্রস্তাব দেবো। আমাদের শিক্ষায় কিছু সিস্টেমেটিক বৈষম্য রয়েছে। যেমন শিক্ষায় অর্থায়ন প্রক্রিয়া। বাজেট প্রক্রিয়াটি প্রচন্ড কেন্দ্রীভূত। একটা প্রতিষ্ঠান করতে বা সংস্কার করতে ঢাকা বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা অধিদপ্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এটার এখনো ডিসেন্ট্রালাইজেশন হয়নি। এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাবনা থবে।

মাদরাসা শিক্ষার বৈষম্য তুলে ধরে এই শিক্ষক বলেন, আমরা যদি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকাই তাহলে দুটি ধারা দেখতে পাই। কওমী একটা ধারা আছে যেটা সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। আবার আলিয়া একটা ধারা আছে। দুই ধারায় শিক্ষার্থী যারা গ্রাজুয়েট হন তারা তাদের কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে নানা জায়গায় বৈষম্যের শিকার হন। দেখা যায়, তারা শুধুমাত্র এক ঘরানারই কর্মসংস্থান পেয়ে থাকে। এই জায়গায় তারা বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছেন। আমরা এই বিষয়গুলো এড্রেস করতে চাই।

সবশেষ প্রণীত কারিকুলাম থেকে বেরিয়ে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত বছরের যে কারিকুলামটা ছিলো সেটি এখনো বাতিল করেনি, টেক্সট বুক রিভিউ করেনি। সেটা নিয়েও এখনো অনেক ধোঁয়াশা কিন্ত রয়েই গেছে। যেমন- পরীক্ষাটা কিভাবে হবে? ওই কারিকুলামের যে পরীক্ষা পদ্ধতি তাতে কি গ্রামে একটা ছেলে বা মেয়ে ঠিকভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে? এগুলোও আমরা এড্রেস করবো। নতুন কারিকুলাম থেকে বের হয়ে একটা বাস্তবায়নযোগ্য পরীক্ষা পদ্ধতি এবং সবার জন্য বোধগম্য টেক্সটবুক প্রণয়নের কথাও আমরা বলবো। 

মো. শাহনেওয়াজ খান আরো বলেন, একটা হিসাব অনুযায়ী ঢাকাতে পথশিশু দশ লাখের কাছাকাছি। পুরো বাংলাদেশে কত পথশিশু আছে তার হিসাবও পাওয়া যায় না। এই পথশিশুরা কিছু ইনফর্মাল এডুকেশনের মধ্যে আসে। কিন্ত বেশিরভাগই ড্রপ আউট হয়ে যায়। এদেরকেও আমরা শিক্ষার আওতাভুক্ত করতে চাই যেনো তারা মানসম্মত এবং ফর্মাল এডুকেশন পায়। এ ছাড়া উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে গবেষণার প্রতি জোর দেয়া, শিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বেতন বৈষম্য নিয়েও সংগঠনটি প্রস্তাবনা রাখবে বলে জানান তিনি।

সংগঠনটির লক্ষ্যের কথা জানিয়ে শাহনেওয়াজ খান বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য নতুন বাংলাদেশে একটি বৈষম্যহীন, মানসম্মত এবং সবার জন্য প্রবেশগম্য একটি শিক্ষা ব্যবস্থা দাঁড় করানো। আমাদের সংগঠনে ঢাকা বিশিবিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটের শিক্ষকরা আছেন। শুধু শিক্ষক নন, শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করতে চান সবাই এখানে আসতে পারেন। আশা করছি আরো অনেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, শিক্ষা কর্মী আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ - dainik shiksha শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ ৩৫ প্রত্যাশীদের অনশনে অসুস্থ কয়েকজন - dainik shiksha ৩৫ প্রত্যাশীদের অনশনে অসুস্থ কয়েকজন ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে - dainik shiksha ব্যারিস্টার সুমন ৫ দিনের রিমান্ডে স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী - dainik shiksha স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী প্রসঙ্গ ব্যর্থ রাষ্ট্র : ড. আলী রিয়াজের সেই সাক্ষাৎকার - dainik shiksha প্রসঙ্গ ব্যর্থ রাষ্ট্র : ড. আলী রিয়াজের সেই সাক্ষাৎকার প্রাথমিকে সৃষ্টি হচ্ছে ৯ হাজার ৫৭২ সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ - dainik shiksha প্রাথমিকে সৃষ্টি হচ্ছে ৯ হাজার ৫৭২ সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী - dainik shiksha স্কুলে না এসেও নিয়মিত বেতন নিতেন সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভার পরামর্শ: পর্ব ২ - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভার পরামর্শ: পর্ব ২ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002669095993042