কারিগরি দলের ‘গাফিলতিতে’ বৃত্তির ফলে ভুল, দায়ী সাতজন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কারিগরি দলের উদাসীনতা ও ভুল এবারের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল তৈরি হয়। এ জন্য প্রাথমিকভাবে সাতজনকে দায়ী করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সচিব ।

ফলের ত্রুটি খতিয়ে দেখতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠন করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদের কাছে জমা দেওয়া হয়।   

তদন্ত কমিটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, বৃত্তির ফল তৈরির সঙ্গে জড়িত কারিগরি দলের অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে গাফিলতি ধরা পড়েছে। গাফিলতি না থাকলে এ ভুলগুলো এড়ানো যেত বলেও তদন্ত কমিটি মন্তব্য করেছে।

তদন্তে দেখা যায়, বৃত্তি পরীক্ষা শেষে জেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্রে কোড দেওয়া হয়। এর পর শিক্ষকরা সেই খাতা মূল্যায়ন করেন। ফলে কার খাতা কোনটি তা বোঝা যায় না। তবে মূল্যায়নের পর প্রাপ্ত নম্বর কোড অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন নম্বরে যোগ হয়। শেষের প্রক্রিয়াকে বলা হয় ডি-কোডিং। এই কোডিং এবং ডি-কোডিং প্রক্রিয়ায় ভুল হয়েছে। দেখা গেছে, এবার দুটি উপজেলার ওয়েবসাইটে একই কোডে প্রবেশ করায় এমন বিপর্যয় ঘটেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারই প্রথম ‘ডিপিএমআইএস’ নামে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বৃত্তির ফল প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়েছে। সেই সফটওয়্যারে কোডিং বিষয়টি মাথায় না থাকার কারণে এমনটা ঘটেছে। তবে সফটওয়্যারে কোনো কারিগরি ত্রুটি ছিল না।

এতে আরও বলা হয়, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বৃত্তির ফল তৈরি করেছিল। এর পর দীর্ঘদিন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর ফল তৈরি করা হয়েছে।

সেই ফলের ভিত্তিতে তখন বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। তদন্তকালে কারিগরি দলের সদস্যরা তদন্ত কমিটির কাছে দাবি করেন, ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ও সরকারি কর্ম কমিশনের ফলেও এমন সমস্যা হয়েছিল।

জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘প্রতিবেদনটি এখনও পুরোটা দেখিনি। তবে যেটুকু দেখেছি, কারিগরি ত্রুটির বিষয়টিই মুখ্য হয়ে উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেব।’

অন্যদিকে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষার কারিগরি বিষয়টি দেখেছে অধিদপ্তরের তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের একটি দল। আর সামগ্রিকভাবে পুরো প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. উত্তম কুমার দাশ। তবে প্রতিবেদনে তাঁকে দায়ী করা হয়নি বলে দাবি তাঁর।  

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের বৃত্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। তবে সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে ফল স্থগিত করা হয়।  ফল নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকেও পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের তদন্ত কোন পর্যায়ে আছে, তা এখনও জানা যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029749870300293